হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণ

বিচারপতি জয়নুলের বিরুদ্ধে দুদকের অনুসন্ধান চলবে

Looks like you've blocked notifications!

অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুসন্ধান চলবে বলে পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

আজ মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই পর্যব্ক্ষেণ দেন।

পর্যবেক্ষণে আদালত এই বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধে সুপ্রিম কোর্টে চিঠি দেওয়া সঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেন। এ ধরনের সাতটি পর্যবেক্ষণ দিয়ে আদালত এ নিয়ে করা একটি রুল নিষ্পত্তি করেছেন।

আদালত পর্যবেক্ষণে বলেন, বিচারপতির বিরুদ্ধে তদন্ত বন্ধে পাঠানো চিঠিকে সুপ্রিম কোর্টের চিঠি বলা যাবে না। কারণ কোনো ব্যক্তি আইনের ঊর্ধ্বে নয়।

দুদকের উদ্দেশে আদালত বলেন, তদন্তের আগে কোনো ব্যক্তিকে যেন হয়রানি না করা হয়।

৩১ অক্টোবর জারি করা রুলের শুনানি শেষে গতকাল সোমবার মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখা হয়।

গত ৯ অক্টোবর আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি মো. জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ অনুসন্ধান বন্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া চিঠি কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করা হয়। ১৯ অক্টোবর রুলের ওপর প্রথম শুনানি হয়।

এর আগে ২৮ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া চিঠিটি হাইকোর্টের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান তরফদার। এরপর আদালত স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুল জারি করেন। রুলে ওই চিঠি কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়।

সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল, দুদক চেয়ারম্যান, আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী ও বিচারপতি জয়নুল আবেদীনকে ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

সাবেক বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০১০ সালের ১৮ জুলাই হিসাব চেয়ে নোটিশ দেয় দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে বিদেশে অর্থপাচারেরও অভিযোগ করে দুদক।

বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিষয়ে অনুসন্ধানের স্বার্থে চলতি বছরের ২ মার্চ সুপ্রিম কোর্টের কাছে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে চিঠি দেয় দুদক। এর জবাবে ২৮ এপ্রিল আপিল বিভাগের অতিরিক্ত রেজিস্ট্রার অরুণাভ চক্রবর্তী স্বাক্ষরিত একটি চিঠি দুদকে পাঠায় সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন।

ওই চিঠিতে বলা হয়, ‘বিচারপতি জয়নুল আবেদীন দীর্ঘকাল বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ এবং আপিল বিভাগের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। দায়িত্ব পালনকালে তিনি অনেক মামলার রায় প্রদান করেন। অনেক ফৌজদারি মামলায় তাঁর প্রদত্ত রায়ে অনেক আসামির ফাঁসিও কার্যকর করা হয়েছে।’

চিঠিতে আরো বলা হয়, ‘বাংলাদেশের সংবিধানের ১১১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের দেওয়া রায় সবার ওপর বাধ্যতামূলক। এমন পরিস্থিতিতে সর্বোচ্চ আদালতের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির বিরুদ্ধে দুদক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করলে তাঁর দেওয়া রায়সমূহ প্রশ্নবিদ্ধ হবে এবং জনমনে বিভ্রান্তির উদ্রেক ঘটবে। প্রাক্তন বিচারপতি জয়নুল আবেদীনের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের কোনোরকম ব্যবস্থা গ্রহণ করা সমীচীন হবে না।’