আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ : খালেদা জিয়া

Looks like you've blocked notifications!

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া বলেছেন, ‘আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। এ মামলায় কোনো কিছুর সঙ্গে আমি জড়িত নই।’

আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামানের আদালতের জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টে দুর্নীতির অভিযোগে মামলায় আদালতের জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় আদালত খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ উপস্থাপন জিজ্ঞেস করেন, আপনি দোষী নাকি নির্দোষ?

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি সম্পূর্ণ নির্দোষ। এ মামলার কোনো কিছুর সঙ্গে আমার সম্পৃত্ততা ছিল না।’

এ সময় আদালত বলেন, ‘আপনি কি কোনো বক্তব্য রাখাবেন?’

জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘মাননীয় আদালত, আমি আত্মপক্ষ সমর্থনে বক্তব্য রাখব।’

আদালত পুনরায় প্রশ্ন করেন আপনি কি এ বিষয়ে কোনো নথি উপস্থাপন করবেন?

খালেদা জিয়া বলেন, ‘প্রয়োজন হলে আমি কাগজপত্র সরবরাহ করব।’       

এর আগে সকাল ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন বক্তব্য উপস্থাপন করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী।

খালেদা জিয়ার বক্তব্য উপস্থাপন শেষে তাঁর আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আদালতে দুই মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন স্থায়ী করার জন্য আবেদন করেন। তবে স্থায়ী জামিনের বিরোধিতা করে বক্তব্য দেন দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। শুনানি শেষে আদালত জামিন স্থায়ী করার আবেদন খারিজ করে দেন এবং দুই মামলার পরবর্তী শুনানি আগামী ৩০ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থন করে আদালতে বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তিনি প্রায় দুই ঘণ্টা বক্তব্য দেন। পরে আদালত আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন।

খালেদা জিয়ার শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, খন্দকার মাহবুব হোসেন, আবদুর রাজ্জাক খান, সানাউল্লাহ মিয়া, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন প্রমুখ।

এ সময় বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, বিএনপির ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদকের উপপরিচালক হারুন-অর-রশিদ বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন—খালেদা জিয়ার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী (পলাতক), হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান

এ ছাড়া জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের দুই কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুদক।

২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তাঁর ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন দুদকের উপপরিচালক হারুন আর রশিদ। ২০১৪ সালের ১৯ মার্চ খালেদা জিয়াসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক বাসুদেব রায়।

মামলায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন—মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।