‘নতুন আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ’

Looks like you've blocked notifications!
মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে ২৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশে ঢুকতে থাকে রোহিঙ্গারা। ছবি : মোহাম্মদ ইব্রাহিম

চলতি বছর আগস্ট মাস থেকে এ পর্যন্ত প্রায় আট লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে এসেছে। এখন পর্যন্ত নিবন্ধনের আওতায় এসেছে ছয় লাখ ‌১২ হাজার। আগস্টের আগে থেকেই বাংলাদেশে আছে ছয় থেকে সাত লাখ রোহিঙ্গা।

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান এনটিভি অনলাইনকে এ তথ্য দিয়েছেন। তিনি জানিয়েছেন, নতুন ও পুরোনো মিলে মোট ১৫ লাখ রোহিঙ্গার নিবন্ধন করার লক্ষ্য আছে তাঁদের।

চলতি বছর ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর নির্যাতনের শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করতে থাকে। কক্সবাজার ও বান্দরবানের একাধিক পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে প্রবেশ করে। কক্সবাজারের কুতুপালং ও বালুখালীতে স্থাপিত হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র।   

গত ১২ সেপ্টেম্বর রোহিঙ্গাদের নিবন্ধন করার কর্মসূচি শুরু হয়।

মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান বলেন, ‘প্রথম দিন মাত্র ১৬টি রেজিস্ট্রেশন করেছিলাম। তখন ১০টি ওয়ার্কস্টেশন দিয়ে আমরা কাজটা শুরু করেছিলাম। এরই মধ্যে ১০০টি ওয়ার্কস্টেশন দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। এই কাজে আমাদেরকে সহযোগিতা করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ১০০ জন অপারেটর, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) ৮০ জন অপারেটর ও নিরাপত্তা দিচ্ছে আনসার ও ভিডিপির সদস্যরা। বহিরাগমন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের লোকবল কম, তবুও সেখানে কিছু কর্মকর্তা দেওয়া হয়েছে।’  

 ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মাসুদ রেজওয়ান। ছবি : এনটিভি 

মাসুদ রেজওয়ান বলেন, ‘প্রতিদিন প্রায় ১৩ হাজারের মতো রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন আমরা করতে পারি। গত মঙ্গলবার পর্যন্ত ছয় লাখ ১২ হাজার রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন করা হয়েছে। আমাদের তথ্য অনুযায়ী, নতুন রোহিঙ্গা এসেছে প্রায় আট লাখের মতো। পুরোনো আছে ছয় থেকে সাত লাখ। সব মিলিয়ে প্রায় ১৫ লাখ রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন আমাদের করতে হবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো আরো রোহিঙ্গা আসছে। এ জন্য আমাদের আরো কিছু সময় লাগবে। যে গতিতে চলছে, সে গতিতে চললে আশা করি ডিসেম্বরের মধ্যেই আমরা ১৫ লাখ রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন শেষ করতে পারব। যদি তারা আরো আসে তবে জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাস লাগবে।’

মাসুদ রেজওয়ান বলেন, ‘নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় রোহিঙ্গার সব তথ্য নিচ্ছি। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমরা রোহিঙ্গাদের ১০ আঙুলের ছাপ নিচ্ছি। এই ১০ আঙুলের ছাপ বায়োমেট্রিক পদ্ধিতে নিয়ে আমাদের সার্ভারে সেভ করছি। সেখান থেকে এই তথ্যগুলো আবার পাসপোর্টের সার্ভারে নিয়ে আসা হবে। যাতে ভবিষৎতে তারা যাতে কোনো দিনই আমাদের পাসপোর্ট নিতে না পারে। পাসপোর্ট অফিসে আসলেই আমরা বুঝতে পারব যে তারা আমাদের নাগরিক না।’

মাসুদ রেজওয়ান বলেন, ‘নিবন্ধন প্রক্রিয়ার জন্য এ পর্যন্ত ছয় কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। আমার বিশ্বাস, ১৫ লাখ রোহিঙ্গার বায়োমেট্রিক নিবন্ধন সম্পন্ন করার কাজ তিন কোটি টাকায় শেষ করতে পারব। বাকি টাকায় কিছু সার্ভার কিনতে হবে, এর সেই সার্ভার দিয়ে পাসপোর্টের সার্ভারে তথ্য সরবাহ করতে হবে।’