রোহিঙ্গা শিশুসহ দুই নারী উদ্ধার, দুই দালালের দণ্ড

Looks like you've blocked notifications!

রাজধানীর ডেমরা এলাকা থেকে শিশুসহ দুই রোহিঙ্গা নারীকে উদ্ধারের কথা জানিয়েছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‍্যাব)। একই সঙ্গে তাদের আশ্রয় দেওয়া এবং ছড়িয়ে পড়তে সহায়তার অপরাধে দুই দালাল গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‍্যাব ১০-এর অধিনায়ক ও পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. শাহাবুদ্দিন খান।

র‍্যাব অধিনায়ক আরো জানান, র‌্যাব ১০-এর একটি দল ও র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. গাউসুল আজমের উপস্থিতিতে সকাল ৬টার দিকে ডেমরা এলাকার মোখলেছুর রহমানের বাসায় আশ্রয় নেওয়া সেতারা বেগম, তাঁর মেয়ে শফিকা (৬) ও জাহেদা বেগম।
আটক দুই দালাল হলেন রাজু মোল্লা (৪৫) ও মোখলেছুর রহমান (৬৫)। 

যেভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করে ঢাকায়
ডিআইজি মো. শাহাবুদ্দিন খান আরো জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায় মিয়ানমারে সাম্প্রতিক সহিংসতা শুরু হওয়ার পর গত ৩ সেপ্টেম্বর সেতারা বেগম ও জাহেদা বেগমের পরিবার অবৈধ পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। সেতারা বেগমের ছোট ভাই সলিমুল্লাহ তিন বছর আগে মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে মালয়েশিয়ায় যান। আর প্রায় ছয় মাস আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে সলিমুল্লাহর সঙ্গে জাহেদা বেগমের বিয়ে হয়। সেই থেকে সেতারার পরিবারের সঙ্গে বসবাস করছেন জাহেদা বেগম। বাংলাদেশে প্রবেশের পর তাঁরা প্রথমে টেকনাফ উপজেলার সোয়ানখালী এলাকায় এক ব্যক্তির বাসায় আশ্রয় নেন। এর কিছু দিন পরে তাঁরা কক্সবাজার শহরের কলাতলী এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন এবং সেখানকার স্থানীয় হোটেলে সেতারা বেগম রান্নাবান্নার কাজ করতেন।

র‍্যাব জানায়, আটক দালাল রাজু মোল্লার ভাতিজা রফিকুল ইসলাম তিন বছর ধরে জাহেদার স্বামী সলিমুল্লাহর সঙ্গে মালয়েশিয়ায় থাকেন। সেখানেই তাঁদের পরিচয়।

সলিমুল্লাহর বোন সেতারা বেগম ও স্ত্রী জাহেদা বেগমকে মালয়েশিয়া পাঠানোর উদ্দেশে বাংলাদেশি পাসপোর্ট করার জন্য কেরানীগঞ্জ মুহুরী পট্টিতে আসতে বলেন রাজু মোল্লা। এ পাসপোর্ট সংক্রান্ত যাবতীয় খরচ জাহেদার স্বামী সলিমুল্লাহ মালয়েশিয়া থেকে পাঠান।

র‍্যাব আরো জানায়, গত ২৫ নভেম্বর জাহেদা বেগম, সেতারা বেগম ও তাঁর মেয়েসহ কক্সবাজার থেকে ঢাকায় এসে রাজু মোল্লার কেরানীগঞ্জের বাসায় গিয়ে তিনদিন অবস্থান করেন। এরপর গত ২৮ নভেম্বর দুপুর বেলা রাজু মোল্লা এ দুই নারীকে বিদেশ পাঠানোর উদ্দেশ্যে পাসপোর্ট করার জন্য কেরানীগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস ও যাত্রাবাড়ী পাসপোর্ট অফিসের দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন এবং পাসপোর্ট করার চেষ্টা করতে থাকেন। এরপর কেরানীগঞ্জ থেকে রাজু মোল্লা মিয়ানমারের তিন রোহিঙ্গা নাগরিককে ঢাকায় এনে ডেমরা এলাকার মোখলেছুর রহমানের বাসায় লুকিয়ে রাখেন। আর আজ ভোরে র‍্যাব অভিযান চালিয়ে তাঁদের উদ্ধার করে।

র‌্যাব সদর দপ্তরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. গাউসুল আজমের উপস্থিতিতে র‌্যাব রোহিঙ্গা নারীদের উদ্ধার করার পর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে রাজু মোল্লাকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও মোখলেছুর রহমানকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। সেতারা বেগম ও তাঁর মেয়েকে কক্সবাজারের বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এবং জাহেদা বেগমকে জামতলী ক্যাম্পে পাঠানোর নির্দেশ দেন।