কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাব নির্বাচনে স্থিতাবস্থা
কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্থিতাবস্থার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এর ফলে নির্বাচনী কার্যক্রম চালানো যাবে না।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ মুহম্মদ মাহবুব-উল আলম এ আদেশ দেন। পাশাপাশি প্রেসক্লাবের বর্তমান কার্যকরী কমিটির ১৪ জন সদস্য ও নির্বাচন কমিশনের তিন সদস্যের প্রতি মামলার অভিযোগের ব্যাপারে আদালত কারণ দর্শানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
বাদীপক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, আদালতের আদেশের ফলে নির্বাচনী প্রক্রিয়া চালানোর আর কোনো সুযোগ নেই। নির্বাচন সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম বন্ধ রাখতে হবে।
তফসিল অনুযায়ী, আগামী ২৩ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের কার্যকরী কমিটির নির্বাচনের তারিখ নির্ধারিত ছিল। প্রেসক্লাবের সদস্য ও এনটিভির স্টাফ রিপোর্টার অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বাদী হয়ে গত ২৮ নভেম্বর মামলাটি করেন।
মামলার আরজিতে বাদী বলেন, আগামী ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের জন্য ভোটার তালিকা মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ। বিশেষ করে সাংবাদিক ভোটার তালিকায় এমন অনেককেই অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে, যাঁরা সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত নন। এমনকি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশে অবস্থানকারী ব্যক্তিও স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে সাংবাদিক সদস্য হিসেবে ভোটার তালিকায় ঠাঁই পেয়েছেন। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ঘোষিত নির্বাচনী তফসিলের ব্যাপারে সদস্যদের জানানো হয়নি। শুধু নোটিশ খাতার মাধ্যমে তফসিলের বিষয়টি জানানো হয়। এর ফলে অনেক ভোটার বিশেষ করে কিশোরগঞ্জের বাইরে অবস্থানরত অনেকেই নির্বাচন সম্পর্কে জানতে পারেননি।
আরো বলা হয়, খসড়া ভোটার তালিকায় আপত্তি দাখিলের জন্য নির্ধারিত গত ১৭ নভেম্বর লিখিত আপত্তি দেওয়া হলেও তা গ্রহণ করা হয়নি।
এ ছাড়া বাদী মামলার আরজিতে প্রেসক্লাবের গঠনতন্ত্র না থাকা, পেশাজীবী সংগঠন হওয়া সত্ত্বেও বিপুলসংখ্যক প্রকৃত সংবাদকর্মীকে সদস্য না করে ঢালাওভাবে সাংবাদিকতা-বহির্ভূত লোকদের সদস্য করা, বার্ষিক সাধারণ সভা ও আয়-ব্যয়ের অডিট (নিরীক্ষা) করে সংগঠনের যাবতীয় কর্মকাণ্ড সাধারণ সদস্যদের না জানানোর মাধ্যমে সদস্যদের অধিকার খর্ব করার বিষয়ে আদালতের দিকনির্দেশনা চেয়েছেন।
মামলার ব্যাপারে বাদী অ্যাডভোকেট মারুফ আহমেদ বলেন, সংগঠনের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য বিনষ্ট করে পূর্ণাঙ্গ গঠনতন্ত্র ছাড়া এবং সাধারণ সদস্যদের প্রতি জবাবাদিহিতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত না করে প্রেসক্লাবের মতো একটি সংগঠন যাচ্ছেতাইভাবে চলতে পারে না। এ নিয়ে বারবার কথা বলেও কোনো কাজ হয়নি। তাই আদালতের শরণাপন্ন হয়েছি।
কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাব নির্বাচনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আজিজুল হক বলেন, ‘আদালত থেকে এখন পর্যন্ত কোনো কাগজ আমি পাইনি। আদালতের কাগজ হাতে পাওয়ার পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
আগামী ২৩ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের নির্বাচনে মোট ভোটার সংখ্যা ২৪৯ জন, যার মধ্যে সাংবাদিক সদস্য ৩৯ জন। মামলায় বাদীপক্ষে এস এম মাহবুবুর রহমান, নাসির উদ্দিন ফারুকি, আবদুল বারী, রূপক রঞ্জন রায়সহ আরো কয়েকজন আইনজীবী শুনানিতে অংশ নেন।