মামলার করার পরদিন মিলল নিখোঁজ স্কুলছাত্রীর লাশ

১১ দিন ধরে নিখোঁজ সুনামগঞ্জের দিরাই উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী তানিয়া বেগমের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার তানিয়ার পরিবারের লোকজন কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার চামড়াবন্দর এলাকা থেকে তানিয়ার লাশ উদ্ধার করেন।
এর আগে গতকাল সোমবার তানিয়ার দাদা আবদুল খালেক সুনামগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য মতিউর রহমানের ভাতিজা নাঈম মিয়াসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে দিরাই থানায় একটি অপহরণের মামলা করেন।
তানিয়ার স্বজনরা জানিয়েছেন, নাঈমের লোকজন ফোন করে জানায়, তানিয়া আত্মহত্যা করেছে। ঠিকানা পেয়ে সেখানে যাওয়ার পরই নাঈম তার লোকজন নিয়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে থানায় মামলা থাকায় দিরাই থানার পুলিশ আওয়ামী লীগ নেতা মতিউর রহমানের দুই ভাতিজা ও নাঈমের চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করেছে।
দিরাই থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহ আলম জানান, গত ৩০ জুলাই সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের মো. শাহাজাহান মিয়ার মেয়ে তানিয়া বেগমকে একই গ্রামের নাঈম মিয়া অপহরণ করে নিয়ে যায়। এ নিয়ে গ্রামে একাধিকবার বৈঠক হয়। গ্রামবাসীর চাপে আজ মঙ্গলবার তানিয়াকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তরের কথা দিয়েছিল নাঈমের পরিবার। গতকাল সোমবার তানিয়ার দাদা আবদুল খালেক অপহরণের অভিযোগে নাঈমসহ ২১ জনের বিরুদ্ধে দিরাই থানায় মামলা করেন। এরপর পুলিশ রাতেই নাঈমের দুই চাচাতো ভাই নজরুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।
শাহ আলম আরো জানান, আজ মঙ্গলবার সকালে তানিয়ার পরিবারের লোকজন তানিয়ার লাশ নিয়ে দিরাই থানায় আসে। তানিয়ার পরিবারের লোকজন পুলিশের কাছে অভিযোগ করে, নাঈম ও তার সঙ্গীরা তানিয়াকে কিশোরগঞ্জে নিয়ে যায় আর সেখানেই তাকে (তানিয়া) হত্যা করে ফেলে রেখে যায়।
এ ব্যাপারে তানিয়ার চাচা সৈয়দ মিয়া সাংবাদিকদের বলেন, নাঈমের এক ভাই জানায় তানিয়া কিশোরগঞ্জে আত্মহত্যা করেছে। তারা (নাঈম ও নাঈমের সঙ্গী) লাশ নিয়ে আসছে। পরে সুনামগঞ্জ থেকে তারা আজ কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার চামড়াবন্দর এলাকায় গেলে লাশ রেখে নাঈম ও তার সঙ্গীরা পালিয়ে যায়। তাঁরা লাশ উদ্ধার করে দিরাই থানায় যান।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বায়েছ আলম জানান, অপহরণকারীর দুই চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম ও নজরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তানিয়ার লাশ ময়নাতদন্তের জন্য লাশ সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। প্রতিবেদনে হত্যার আলামত পাওয়া গেলে অপহরণ মামলার সাথে হত্যাসহ অপরাপর ধারা সংযুক্ত করা হবে।