প্রচণ্ড ঠান্ডায় দুবলার চরে শুঁটকি তৈরির মাছ সংকট

Looks like you've blocked notifications!
পুরোনো ছবি

দেশের দক্ষিণাঞ্চলের সুন্দরবনের দুবলার চর বিখ্যাত শুঁটকিপল্লীর কারণে। প্রায় সবাই জানেন, প্রতিবছর নির্দিষ্ট সময়ে এই চরজুড়ে চলে শুঁটকি তৈরির বিশাল কর্মযজ্ঞ।

তবে এবারের দৃশ্য ভিন্ন। প্রচণ্ড শীতের কারণে দুবলার চরে দেখা দিয়েছে চরম মাছ সংকট। বৈরী আবহাওয়ার কারণে আশানুরূপ মাছ না পেয়ে অনেকটা নিরাশ হয়েই লোকসানের বোঝা নিয়ে দুবলার বিভিন্ন চর ছেড়ে যেতে শুরু করেছেন জেলেরা।

অন্যদিকে, এ বছর চরগুলোতে মাছের আকাল দেখা দেওয়ায় অন্য বছরের তুলনায় দুবলার শুঁটকি খাত থেকে রাজস্ব কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছে বন বিভাগ। তবে দুবলা রেঞ্জের ফরেস্ট রেঞ্জার কাজী মোকাম্মেল কবির বলেন, টার্গেট অনুযায়ী রাজস্ব আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে।

প্রতিবছর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময় দুবলার চরে বন বিভাগের নিয়ন্ত্রণে মাছ শুঁটকিকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়। এর মাধ্যমে দুবলার শুঁটকিপল্লী থেকে বছরে প্রায় দেড় থেকে দুই কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়ে থাকে। তবে আবহাওয়ার কারণে এ বছর মাছ শুঁটকি প্রক্রিয়াকরণের কাজ শুরু হয়েছে প্রায় এক মাস পর।

মৌসুম শুরু হওয়ার পর পরই সরকারি ঘোষণা অনুসারে ১ থেকে ২২ অক্টোবর পর্যন্ত ইলিশ ধরার জন্য সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এই নিষেধাজ্ঞায় সাদা মাছ এবং কাঁকড়া ধরা বন্ধেরও নির্দেশ দেয় মৎস্য অধিদপ্তর। এরপর ২৮ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত রাসমেলা উপলক্ষে মাছ আহরণ ও শুঁটকি করার কাজ বন্ধ থাকে। এ বছর এমনতেই এক মাস দেরিতে শুঁটকি তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। তার ওপর ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা এবং রাসমেলা মিলে এই বিলম্ব দাঁড়ায় দুই মাসে।

দুবলার জেলে ব্যবসায়ী আল আমিন শেখ, রুহুল আমীন বাচ্চু, মহাজন মো. কামাল, রেজাউল খোকন টোটন, মাছ পরিবহন ঠিকাদার মো. জালাল আহম্মেদ, বুলবুল আহম্মেদ মুক্তসহ অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রচণ্ড শীতের কারণেই মূলত এই মাছের আকাল। এই জেলেরা তাঁদের অভিজ্ঞতা থেকে বলেন, গত বছরগুলোর তুলনায় এবার শীতের প্রকোপ বেশি থাকায় পানি অত্যন্ত ঠান্ডা। ফলে গভীর সাগরে মাছ ওপরে উঠে আসছে না। শিগগিরই ঠান্ডা কমার সম্ভাবনা না দেখে অনেক জেলেই অহেতুক চরে বসে লোকসান না গুনে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে বলেও জানান তাঁরা।