কুষ্টিয়ায় হানিফ

‘বিএনপির উচিত খালেদা জিয়াকে আমরণ কারাগারে রাখা’

Looks like you've blocked notifications!
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাহবুব-উল আলম হানিফ আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। ছবি : এনটিভি

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও সংসদ সদস্য মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেছেন, বিএনপির এখন উচিত দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আমরণ কারাগারেই রাখা। তাহলে বিএনপির জনপ্রিয়তা দেশের সবচেয়ে শীর্ষ পর্যায়ে চলে যাবে।

আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন হানিফ।

হানিফ বলেন, ‘ব্যারিস্টার মওদুদ সাহেব যে কথা বলেছেন যে বেগম খালেদা জিয়া জেলে থাকলে প্রতিদিন ১০ লাখ করে ভোট বাড়বে। তাহলে বিএনপির এখন উচিত বেগম খালেদা জিয়াকে আমরণ পর্যন্ত কারাগারেই রাখা। তাহলে বিএনপির জনপ্রিয়তা দেশের সবচেয়ে শীর্ষ পর্যায়ে চলে যাবে। এখন এটা মওদুদ সাহেবরা মনে হয় চায় যে বেগম খালেদা জিয়া আমরণ কারাগারেই থাকুক। সে কারণেই এ কথাগুলো বলছেন।’

সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সরকার মহাবিপদে আছে কি না সেটা তো আমীর খসরু সাহেবরা ভালোই জানেন। যারা বলছে, তারা জানে। প্রতিদিন রাস্তাঘাটে কান্নাকাটি কারা করছে, তাও দেশবাসী দেখছে। যে দলের শীর্ষ পর্যায়ের নেতারা দেশে বিদেশে দুর্নীতিবাজ হিসেবে জেল খাটছেন, সে দলের নেতারা যদি বলেন যে, তারা এখন বিপদে নেই। তাহলে এর মাধ্যমে এটা প্রমাণিত হয়, এই দলটা মানসিকভাবে একটা দুর্নীতিগ্রস্ত দল। এই দলের দ্বারা দেশ ও জাতির কোনো ভবিষ্যৎ কখনো ভালো হতে পারে না। এই দল কখনো ক্ষমতায় আসে তাহলে এরা গোটা দলকে দুর্নীতিবাজ বানিয়েছে, দেশটাকেও এরা দুর্নীতিবাজ বানিয়ে ছাড়বে। অতএব, জনগণ এই দলকে ক্ষমতা থেকেই শুধু দূরে দেখতে চায় না, এই দলের দুর্নীতিবাজ শীর্ষ নেতাদের কারাগারেই দেখতে চায়।’

হানিফ আরো বলেন, ‘দুর্নীতিবাজ যেকোনো ব্যক্তি বা সন্ত্রাসী কোনো ব্যক্তি সে যদি কারাগারে থাকে তাহলে দেশের জন্য এটাই নিরাপদ। কোনো সন্ত্রাসী যদি কারাগারের বাইরে থাকে তাহলে মানুষ ভাববে, সাধারণ মানুষের জন্য এটা আতঙ্কের কারণ হতে পারে। আর দুর্নীতিবাজরা, সন্ত্রাসীরা কারাগারে থাকুক-জনগণ এটাই চায়।’

এর আগে কুষ্টিয়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন মাহবুব-উল-আলম হানিফ। বক্তব্য দেন কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসান, কুষ্টিয়া জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হাজি রবিউল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খান, সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী প্রমুখ।

এর আগে গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে আয়োজিত আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আমরা আইনি প্রক্রিয়া চালিয়ে যাব এবং শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মাধ্যমে সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আদায় করব। খালেদা জিয়াকে একদিন জেলে রাখলে আওয়ামী লীগের ১০ লাখ ভোট কমবে। আর সেই ভোটগুলো বিএনপির পক্ষে আসবে। সরকার খালেদা জিয়াকে কারাগারে পাঠানোয় আওয়ামী লীগের অনেক সমর্থক মর্মাহত হয়েছেন, যাঁরা দীর্ঘদিন নৌকায় ভোট দিয়েছেন, তাঁরাও এবার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, খালেদা জিয়াকে ভোট দিবেন।

মওদুদ আহমদ আরো বলেছিলেন, বর্তমান সরকার মনে করেছিল খালেদা জিয়াকে সাজা দিলে বিএনপির জনপ্রিয়তা কমে যাবে, কিন্তু সেটি ভুল প্রমাণিত হয়েছে, বরং সরকারের জনপ্রিয়তা কমেছে। বেগম জিয়া জেলে গিয়ে প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি নেতৃত্ব শূন্য নয়। যারা মনে করেছে বেগম জিয়া কারাগারে গেলে বিএনপি নেতৃত্ব শূন্য হবে তাদের ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।’

মওদুদ আহমদের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে আজ ভোলা সদর উপজেলায় এক অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘বিএনপি নেতা মওদুদ আহমদ বলেছেন, আরো কেউ কেউ বলেছেন যে বেগম খালেদা জিয়া যত দিন জেলে থাকবেন, তিনি তত বেশি জনপ্রিয় হবেন এবং আওয়ামী লীগের ভোট কমবে। তাহলে দয়া করে তারা, আপনারা জেনে রাখেন, আপনারা বেইল মুভ করবেন না। আপনারা কোর্টে যাবেন না। জেলে রেখে দেন এবং তাঁকে (খালেদা জিয়া) জেলে রেখে ইলেকশন করেন। কারণ উনি জেলে থাকলে যদি জনপ্রিয়তা বাড়বে তাহলে ইলেকশনে আপনারা জিতে যাবেন। দেখেন কী রকম শিক্ষিত মানুষের কী রকম বক্তব্য। সেজন্য আবার আমাদের এক মন্ত্রী বলেছেন, খালেদা জিয়াকে মুক্তির চেষ্টা তারা করে না। জেলে থাকলে নাকি জনপ্রিয়তা বাড়বে এবং আওয়ামী লীগের ভোট দৈনিক ১০ লক্ষ কমবে। তাহলে তো আপনারা তাঁকে (খালেদা জিয়া) জেলে রেখে দেন। বার কইরেন না। কিন্তু আমরা আইনে বিশ্বাস করি। আইন আইনের মতো চলবে। সেটাই আমাদের প্রত্যাশা।’