সুনামগঞ্জ আদালতে নিয়োগে অনিয়মের প্রতিবাদে মানববন্ধন

Looks like you've blocked notifications!
সুনামগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ এনে আজ মঙ্গলবার জেলা আইনজীবী ভবনের সামনে মানববন্ধন করা হয়। ছবি : এনটিভি

সুনামগঞ্জের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে সহায়ক কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে অনিয়মের অভিযোগ এনে মানববন্ধন ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালিত হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার দুপুরে জেলা আইনজীবী ভবনের সামনে ‘আমরা সুনামগঞ্জবাসী’ ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে নিয়োগে অংশ নেওয়া প্রার্থী, আইনজীবী, শিক্ষক, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের লোকজন অংশগ্রহণ করেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন অ্যাডভোকেট এনাম আহমদ। এতে বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী বজলুল মজিদ চৌধুরী খসরু, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল মুমিন, আইনজীবী রবিউল লেইছ রুকেশ,  আইনজীবী সালেহ আহমেদ, আইনজীবী বজলুর রশীদ, আইনজীবী রুহুল তুহিন, আইনজীবী মাসুক আলম, আইনজীবী আবদুল হক, আইনজীবী বুরহান উদ্দিন দোলন, আইনজীবী মণিষ কান্তি দে মিন্টু ও নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নেওয়া নিমাই চন্দ্র।

মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, বিচারিক হাকিম কার্যালয়ে সহায়ক কর্মকর্তা ও কর্মচারী পদে নিয়োগে কোনো প্রশ্নপত্র বা আসন বিন্যাস ছিল না। বিচারকরা নিজেদের আত্মীয়স্বজন ও নিজ জেলার প্রার্থীদের নিয়োগ দিয়ে স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নীতিমালা লঙ্ঘন করেছেন। সুনামগঞ্জ জেলার প্রার্থীদের বাদ দিয়ে দুর্নীতির মাধ্যমে এ নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বক্তারা আরো অভিযোগ করেন, চাকরিপাওয়া ৩৩ জনের মধ্যে ২২ জনই বিচারকদের নিজ এলাকার। অথচ জেলা কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটাকে গুরুত্ব না দিয়ে নিজেদের আত্মীয়দের নিয়োগ দিয়েছেন।  অবিলম্বে এ নিয়োগ বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে প্রকৃত মেধাবীদের নিয়োগ দিতে হবে এবং এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার করতে হবে। না হলে আরো কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। এ ঘটনায় আদালতে মামলা করার ঘোষণাও দেন বক্তারা।

মানববন্ধন শেষে আইনজীবীরা আদালত চত্বরে বিক্ষোভ ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি পালন করেন।

অ্যাডভোকেট বজলুর মজিদ চৌধুরী খসরু বলেন, ‘আমরা আইনজীবীসহ সাধারণ মানুষ যাদের কাছে আস্থা রাখি, তাঁরা হলেন বিজ্ঞ বিচারকরা। আমাদের হাওর এলাকায় মানুষ নানা কষ্টে আছেন। সেই জায়গায় বিজ্ঞ বিচারকরা তাঁদের নিয়োগ পরীক্ষায় সুনামগঞ্জের মানুষকে বঞ্চিত করে অনিয়মের মাধ্যমে নিজ এলাকার মানুষ নিয়োগ দিয়েছেন, যা খুবই দুঃখজনক।’ সব নিয়োগ স্থগিত করে পুনরায় নিয়োগের দাবি জানান  তিনি।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার নুরুল মুমিন বলেন, ‘নিয়োগ পরীক্ষায় মুক্তিযোদ্ধা কোটায় ১০ জন নেওয়ার কথা, সেখানে সুনামগঞ্জ থেকে মাত্র একজন নেওয়া হয়েছে।’

অ্যাডভোকেট স্বপন কুমার বিতর্কিত ও পক্ষপাতিত্বের নিয়োগ বাতিল চেয়ে যারা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের বিচারের দাবি করেন। সেই সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতি দিয়ে তদন্ত কমিটি করারও দাবি জানান তিনি।

জগৎজ্যোতি পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক ও অ্যাডভোকেট সালেহ আহমদ বলেন, এই অস্বচ্ছ ও দুর্নীতিগ্রস্ত নিয়োগের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন করে বঞ্চিত মানুষের অধিকার আদায় করতে হবে। সেই সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং দুর্নীতি দমন কমিশনকেও (দুদক) বিষয়টি জানানোর কথা বলেন তিনি।

নিয়োগে অংশ নেওয়া নিমাই চন্দ্র অভিযোগ করে বলেন, ‘পরীক্ষার সময় কোনো আসন বিন্যাস করা হয়নি। কোনো প্রশ্নপত্রও দেওয়া হয়নি। মৌখিকভাবে প্রশ্ন করা হয়েছে।’ তারপরও ভালো পরীক্ষা দিলেও নিয়োগ না পাওয়ার অভিযোগ করেন তিনি।

মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন আইনুল ইসলাম বাবলু, আনিছুজ্জামান শামীম , রুবেল আহমদ, ফজর আলী শামিম, সাজ্জাদুর রহমান নেছার, আবদুল বাহার, আবদুল হামিদ, মোশাহিদ আলী, জেলা উদীচীর সাধারণ সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, অ্যাডভোকেট জহুর আলী, অ্যাডভোকেট নাসিরুল হক আফিন্দি, অ্যাডভোকেট প্রণব কান্তি দাস, অ্যাডভোকেট, হুমায়ুর কবীর ও চাঁন মিয়া।