সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতের শাস্তি দাবি

Looks like you've blocked notifications!
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা। ছবি : এনটিভি

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সভাপতি সাইফুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীর নয়াপল্টনে সংবাদ সংগ্রহের সময় দুই সাংবাদিককে নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।

আজ মঙ্গলবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সাংবাদিক নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ দাবি জানান।

সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা সাংবাদিক নির্যাতনকারী পুলিশের শাস্তির দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় দিয়েছিলাম। কিন্তু সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

ডিআরইউ সভাপতি বলেন, ‘আমরা সাংবাদিক সমাজ দেশের জন্য। মানুষের জন্য কাজ করি। কিন্তু পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বারবার পুলিশি নির্যাতনের শিকার হচ্ছি। কিন্তু এর কোনো প্রতিকার করা হচ্ছে না। তাই বাধ্য হয়ে আজ আমরা রাস্তায় নেমেছি।’

ডিআরইউর সাধারণ সম্পাদক শুক্কুর আলী শুভর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন ডিআরইউর সাবেক সভাপতি শাহেদ চৌধুরী, সাখাওয়াত হোসেন বাদশা, সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, রাজু আহমেদ, মুরসালিন নোমানি, খায়রুজ্জামান কামাল, শহীদ উল্লাহ, অমিয় ঘটয় পুলক, শাহজাহান মিয়া,  মানিক মুনতাসির, সদস্য জাফর ইকবাল, মোশাররফ হোসেন কামাল।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিএনপির কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচির খবর সংগ্রহ করতে গিয়ে পরিচয় দেওয়ার পরও সাংবাদিক কিরণ শেখকে মারধর করেন পল্টন থানার পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) কুবায়েত। এ ছাড়া দৈনিক সমকালের স্টাফ রিপোর্টার কামরুল ইসলামকে লাঞ্ছিত করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।

একটি অনলাইন নিউজ পোর্টালে কর্মরত কিরণ শেখ এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিএনপির পূর্বঘোষিত কালো পতাকা প্রদর্শন কর্মসূচির সংবাদ সংগ্রহ করতে নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে আসি। এ সময় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আমাকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে। আমার পরিচয় জানতে চাইলে আমি সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে অফিসের পরিচয়পত্র দেখাই তাদের। এরপর অশ্রাব্য ভাষায় গালাগালি করে আমাকে কিল ঘুষি ও লাথি মেরে মাটিতে ফেলে দেয়। শার্ট ধরে টেনে মাটি থেকে তুলে আবারও মারধর করা হয়।’

কিরণ শেখ আরো বলেন, ‘আমাকে কেন মারধর করা হচ্ছে জানতে চাইলে আবারেও গালে থাপ্পর মেরে বলা হয়- একদম চুপ, কোনো কথা বলবি না।’

এদিকে, কামরুল ইসলাম এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমাকে হঠাৎ করে ডেকে নিয়ে যায় হোটেল ভিক্টোরিয়ায়। সেখানে আমার পরিচয় দেওয়ার পরও আমার মোবাইল ও ফেসবুক ঘাটাঘাটি করে। এরপর আমাকে বলে তোমাকে টার্গেট রাখলাম। পরে অন্য সাংবাদিকরা গিয়ে আমাকে মুক্ত করে আনেন।’

এ ঘটনার পর নয়াপল্টন কার্যালয়ের সামনে কর্তব্যরত গণমাধ্যমকর্মীরা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে প্রতিবাদ করলে তারা দুঃখ প্রকাশ করেন।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ মতিঝিল বিভাগের সহকারী কমিশনার (এসি) আরিফুল ইসলাম বলেন, যখন রাজনৈতিক কোনো কর্মসূচিকে ঘিরে পুলিশ অভিযানে যায় সেখানে অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটে যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করি যত দূর সম্ভব অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়িয়ে চলতে।’ তিনি এজন্য দুঃখও প্রকাশ করেন।

এসি আরিফুল বলেন, ‘আমাদের এডিসি (অতিরিক্ত উপকমিশনার) স্যারও সরি বলেছেন। তারপর তো আর কিছুই করার থাকে না।’