হাওরাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি
পাঁচদিন ধরে সুনামগঞ্জে উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারি বর্ষণে জেলার সবকটি নদী ও হাওরের পানি বেড়েই চলেছে। প্রথম দফা শেষে দ্বিতীয় দফায় আবারও জেলার পাঁচটি উপজেলার দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে লাখো মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
পাহাড়ি ঢলের কারণে সড়ক ও সেতু ডুবে জেলা সদরের সঙ্গে তাহিরপুর, বিশ্বম্ভর পুর উপজেলার যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। একই সঙ্গে দেয়ারাবাজার উপজেলার সঙ্গে ছাতক ও জেলা সদরের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
ওই সব এলাকার পুকুর তলিয়ে গিয়ে কয়েক লাখ টাকার মাছ পানিতে ভেসে গেছে। কয়েকশ হেক্টর বোরো ফসলের বীজতলা পানির নিচে চলে গেছে।
জেলা প্রশাসন জরুরি বৈঠক করে মন্ত্রণালয়ে দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণসামগ্রী পাঠানোর জন্য চিঠি পাঠানো হয়েছে।
জেলা প্রশাসক শেখ রফিকুল ইসলাম জানান, আগাম বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় যাতে সবাই সতর্ক থাকে সে জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি বৈঠক হয়েছে। মন্ত্রণালয়ে প্লাবিত এলাকায় ত্রাণসহায়তা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে। তিনি আরো জানান, জেলার বেশির ভাগ এলাকা পাহাড়ের পাদদেশে হওয়ায় ঢলের পানিতে প্লাবিত হয়, তবে পানি খুব দ্রুতই নেমে যায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী মো. মামুন হালদার জানান, আজ শুক্রবার সকালে সুনামগঞ্জ শহরের ষোলঘর পয়েন্টে সুরমা পানির বিপৎসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। গতকালের চেয়ে নদীর পানি কিছুটা কমেছে। তবে হাওরের পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাইফুল ইসলাম জানান, খাসিয়ামারা রাবার ড্যাম দিয়ে পানি ঢুকে উপজেলার সুরমা, বাংলাবাজার ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়নের শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। উপজেলার সঙ্গে টেংরাটিলাসহ কয়েকটি ইউনিয়নের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। ছাতক-দোয়ারার একমাত্র সড়কটিও পানির নিচে চলে গেছে।
এদিকে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার দক্ষিণ বাদাঘাট, শক্তিয়ারখলা, ফতেপুর, সাতগাঁও, ইউনিয়নের ৩০টির মতো গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ফতেহপুর ও সাতগাঁও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কয়েকটি পরিবার আশ্রয় নিয়েছে।
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. হারুন অর রশীদ জানান, ‘সুলেকাবাদ ইউনিয়নের চলতি নদীর পাড়ের ১৫-১৬টি ঘরবাড়ি নদীতে ভেসে গেছে। প্রচুর ফসলের ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। তবে এখনো প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো সহযোগিতা করা হয়নি।