‘সর্বত্র দলীয়করণের কারণে বাড়ছে দুর্নীতি’

Looks like you've blocked notifications!
দুর্নীতিবিষয়ক সেমিনারের আয়োজন করে নাগরিক ঐক্য। ছবি : এনটিভি

দেশের ব্যাংকিং খাত এখন তলাবিহীন ঝুড়ি। জবাবদিহিতার অভাব এবং সর্বত্র দলীয়করণের কারণে বাড়ছে দুর্নীতি। রাজধানীতে নাগরিক ঐক্য আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেছেন বক্তারা।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবে দুর্নীতি বিষয়ক ওই সেমিনারের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে দেশের আর্থিক খাতসহ বিভিন্ন খাতের দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরা হয় মূল প্রবন্ধে। আলোচনায় অংশ নিয়ে বক্তারা বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ার কারণে উৎসাহিত হচ্ছে দুর্নীতিবাজরা। যার পেছনে বড় ভূমিকা রাখছে রাজনীতি।’

অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘তলাবিহীন ঝুড়ি কথাটা আমরা একবার শুনেছিলাম। এখন বাংলাদেশে ব্যাংকগুলো প্রকৃতঅর্থে তলাবিহীন ঝুড়িতে পরিণত হয়েছে। টাকা দিচ্ছেন কিন্তু তা চলে যাচ্ছে আরেকজনের পকেটে। যতই আপনি টাকা ঢালবেন সে টাকাটা কোথায় যাবে সেটার কোনো চিহ্ন থাকবে না।’

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বোর্ডরুমে নিয়ে আসবেন রাজনীতি, ব্যাংকের ভেতরে রাজনীতি নিয়ে আসবেন সেটা তো কোনোভাবে কাম্য নয়। রাজনীতির প্রভাব চলে আসাতেই কিন্তু এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। দক্ষ, ভালো লোককে আপনি সামনে এগিয়ে নিয়ে আসেন খারাপ লোকদের প্রশাসনিক শাস্তি দেন। দরকার হলে ফৌজদারি আদালতে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তির বিধান করেন।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে দেখবেন ফিলিপাইনে দুর্নীতি বাড়ছে। কেন? ফিলিপাইনে গভর্নেন্স বলতে কিছু নেই। গত কয়েক বছর ধরে দেখবেন শ্রীলংকায় দুর্নীতি কমছে। কেন? কারণ শ্রীলংকায় গভর্নেন্স পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। দুর্নীতি কেন হচ্ছে আমাদের দেশে তা দুই একটা ব্যক্তির নাম উল্লেখের চেয়ে গভীরভাবে সেটা পর্যবেক্ষণ করা দরকার।’

গণতন্ত্র  এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার নিয়ে স্বাধীন হওয়া বাংলাদেশ, দীর্ঘ সাড়ে চার দশকে কাঙ্খিত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন বক্তারা।

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন বলেন, ‘স্বাধীনতার পর একটা শাসনতন্ত্র দেওয়া হয়েছে। আইনের শাসন বলেন, ব্যক্তি অধিকার বলেন, বিচারবিভাগের স্বাধীনতা বলেন সবকিছুই হল গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র। এ শাসনতন্ত্র আমরা রক্ষা করতে পারছি না।’

সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হাফিজউদ্দিন খান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের এখন পর্যন্ত যে কর্মকাণ্ড দেখেছি তাতে আস্থা রাখার কোনো কারণ আমি দেখি না। সুতরাং ২০১৪ সালের মতই হবে আবার।’

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আসুন বৃহত্তর ঐক্যে গণতন্ত্রের দাবিতে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অঙ্গীকার করার দাবিতে যে কোনো একটা জনবদ্ধ দাবির ভিত্তিতে লড়াই গড়ে তুলি।’