সিলেটে আরেক শিশু হত্যার অভিযোগ
সিলেটে শিশু রাজন হত্যার রেশ না কাটতেই এবার আরেক শিশুকে নির্যাতন করে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। সদর উপজেলার ঘোপালে একটি বিস্কুট কারখানায় পাওনা টাকা চাওয়ায় মো. আকমল হোসেন (১১) নামের শিশুশ্রমিককে পিটিয়ে হত্যা করা হয় বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
urgentPhoto
এ অভিযোগে নিহত শিশুটির বাবা এখলাস মিয়া বাদী হয়ে কারখানার মালিক হাজি ওয়াহাব আলীসহ পাঁচজনকে অভিযুক্ত করে জালালাবাদ থানায় গত শুক্রবার মামলা করেছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার শিশুটি মারা যায়।
আকমল হোসেনের বাড়ি সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের পাহাড়পুর (পূর্ব রাজনপুর) গ্রামে। সে সদর উপজেলার ঘোপালে ফুড মার্ক ব্রেড অ্যান্ড বিস্কুট ফ্যাক্টরিতে কাজ করত।
নির্যাতন করে শিশু হত্যার অভিযোগে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আখতার হোসেন। তিনি বলেন, ‘নিহত শিশুর বাবা লিখিত একটি এজাহার দিয়েছেন, যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে। মামলা রেকর্ডের পর পুলিশি তদন্ত শুরু হয়েছে।’
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, দুই বছর ধরে এক হাজার ৩০০ টাকা বেতনে ঘোপাল ফুড মার্ক ব্রেড কারখানায় চাকরি করত তাঁর ছেলে আকমল। কয়েক দিন আগে এর মালিক মো. ওয়াহাব আলী ও কারিগর আবদুর রহমানের কাছে বকেয়া বেতনের টাকা চাইতে গিয়ে তাদের সঙ্গে তাঁর কথাকাটাকাটি হয়। এর পর থেকে ওয়াহাব ও কারিগর আবদুর রহমান তাঁর ছেলেকে নির্যাতন করে আসছিল। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে তাকে আঘাত করা হয়। এতে তাঁর ছেলে গুরুতর আহত হলে দ্রুত ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ভর্তি করা হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ অবস্থায় পুলিশ আকমলের লাশ উদ্ধার করে একই হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
পরে খবর পেয়ে রাত সোয়া ৮টার দিকে ওসমানী হাসপাতালে গিয়ে ছেলের মাথা থেঁতলানো, মুখের ডান পাশ ফোলা এবং নাক-কান দিয়ে রক্ত বেরোতে দেখেন বলে অভিযোগ করেন এখলাছ মিয়া।
এদিকে, ময়নাতদন্ত শেষে শনিবার আকমলের লাশ তার গ্রামের বাড়িতে নিয়ে দাফন করা হয়।
স্থানীয়দের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পরিবারের আরো কয়েক সদস্য ওই কারখানায় কাজ করার সূত্র ধরে শিশু আকমল এখানে কাজ করতে আসে। ঘটনার দিন কাজ শেষে আরো দুই শিশু পুকুরে গোসল করতে গিয়ে পাশের শৌচাগারের দেয়ালে উঠে লাফালাফি করছিল আকমল। একপর্যায়ে পুরোনো দেয়াল ভেঙে আকমলের ওপর পড়ে গেলে সে গুরুতর আহত হয়। তাৎক্ষণিক তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
প্রসঙ্গত, গত ৮ জুলাই সদর উপজেলার কুমারগাঁওয়ে ১৩ বছরের শিশু শেখ সামিউল আলম রাজনকে পিটিয়ে হত্যা করার পাশাপাশি নির্যাতনের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়, যা নিয়ে দেশে-বিদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়।