স্কুলছাত্র সাজ্জাদের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন নিয়ে টালবাহানা

কিশোরগঞ্জে স্কুলছাত্র সাজ্জাদ হোসাইন প্রান্তর মৃত্যুর ২০ দিনেও চিকিৎসক ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দেননি বলে দাবি করেছে রেলওয়ে পুলিশ। অন্যদিকে জেলার সিভিল সার্জন দাবি করেছেন, গত বৃহস্পতিবারই প্রতিবেদনটি জিআরপি থানায় পাঠানো হয়েছে।
এদিকে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেওয়ার দাবি জানিয়ে আজ রোববার কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল ঘেরাও ও সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছে সাজ্জাদের সহপাঠীসহ স্থানীয় এলাকাবাসী।
পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ বেলা ১১টায় প্রান্ত স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে জেলা শহরের আজিম উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের খেলার মাঠ থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক ঘুরে জেনারেল হাসপাতালের সামনে এসে শেষ হয়। হাসপাতালের ভেতরে কিছুক্ষণ বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে মিছিলকারীরা হাসপাতালের সামনে কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ সড়কে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করে। সমাবেশে বক্তব্য দেন সাজ্জাদের বড় ভাই মোশারফ হোসেন শান্ত ও প্রান্ত স্মৃতি সংসদের সদস্য সচিব মো. এস. হোসেন আকাশ। এ সময় সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পরে পুলিশ এসে তাদের সড়কের ওপর থেকে সরিয়ে দিলে যানবাহন চলাচল পুনরায় স্বাভাবিক হয়।
বক্তারা ঘটনার ২০ দিনেও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না দেওয়া এবং দায়ের করা হত্যা মামলার কোনো আসামি গ্রেপ্তার না হওয়ায় বিষয়টিকে রহস্যজনক দাবি করে নিন্দা জানান। সেই সঙ্গে দাবি আদায়ে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
কিশোরগঞ্জ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র সাজ্জাদ হোসাইন প্রান্তর ক্ষত-বিক্ষত লাশ গত ২ আগস্ট রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা শহরের শোলাকিয়া এলাকায় রেললাইনের ওপর পাওয়া যায়। সে শহরের উকিলপাড়া এলাকার ব্যবসায়ী এনামুল হক মুছা মিয়ার ছেলে।
সাজ্জাদের পরিবারের দাবি, তাকে পরিকল্পিতভাবে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ রেললাইনের ওপর ফেলে রাখা হয়।
এ ঘটনায় এনামুল হক মুছা মিয়া তাঁর ছেলেকে হত্যার অভিযোগ এনে তিনজনের নাম উল্লেখ করে রেলওয়ে থানায় মামলা করেন। ৩ আগস্ট কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে সাজ্জাদের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
দ্রুত ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন দাখিল ও জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবিতে এর আগে ক্লাস বর্জন, মশাল মিছিল ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
এদিকে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন নিয়ে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে জেলার সিভিল সার্জন মোখলেসুর রহমান বলেন, গত বৃহস্পতিবার সাজ্জাদের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন জিআরপি থানায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে কিশোরগঞ্জ রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুভাষ কান্তি পাল এখনো প্রতিবেদন পাননি দাবি করে বলেন, ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পর স্কুলছাত্র সাজ্জাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। এজাহারভুক্ত আসামিদের আটকের চেষ্টা চলছে।