সাংবাদিক ফয়সালের লাশের অপেক্ষায় পরিবার

Looks like you've blocked notifications!
বৈশাখী টেলিভিশনের সাংবাদিক ফয়সাল আহমেদ। ছবি : সংগৃহীত

বৈশাখী টেলিভিশনের সাংবাদিক ফয়সাল আহমেদের মৃত্যুতে শোকে কাতর তাঁর পরিবার, প্রতিবেশী ও স্বজনরা। অনেকটা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন তাঁর মা-বাবা।

ফয়সাল বন্ধুবান্ধব ও প্রতিবেশীসহ সবার কাছেই ছিলেন প্রিয়। তাঁর কোনো স্মৃতিই ভুলতে পারছেন না বাল্য বন্ধুরা। ছোট বেলা থেকেই ফয়সাল ছিলেন সংস্কৃতিমনা। লেখাপড়ার পাশাপাশি খেলাধুলা ও মঞ্চ নাটকেও অভিনয় করতেন ফয়সাল। তাঁর মৃত্যুতে শোকার্ত হয়ে পড়েছেন যে বিদ্যালয়ে তিনি লেখাপড়া করেছেন সেই বিদ্যালয়ের শিক্ষকরাও। নেপালে ইউএস-বাংলার উড়োজাহাজ দুর্ঘটনায় নিহত হয় আহম্মেদ ফয়সাল।

ফয়সালের পরিবার জানায়, শরীয়তপুরের ডামুড্যা পৌরসভার সামসুদ্দিন সরদার ও মোসাম্মৎ সামসুন্নাহার বেগমের বড় ছেলে ফয়সাল আহমেদ (২৯)। পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। ২০০৪ সালে ডামুড্যা মুসলিম উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করার পর ঢাকা তিতুমীর কলেজে এইচএসসি এবং স্টামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে অনার্স সম্পন্ন করেন ফয়সাল। ব্যক্তিজীবনে অবিবাহিত ফয়সাল বৈশাখী টেলিভিশনে স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ডামুড্যার পূর্ব মাদারীপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে তাঁর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে মরদেহ।

সোমবার বিকেলে ফয়সালের গ্রামের বাড়ি ডামুড্যায় গিয়ে দেখা যায়, শোকের মাতম চলছে স্বজনদের মধ্যে। ছেলের শোকে ফয়সালের মা সামসুন্নাহার বেগম অচেতন প্রায়। ফয়সালের বাবা সামসুদ্দিন সরদার অনেকটাই নির্বাক। অপেক্ষায় আছেন কখন ছেলের মরদেহ নিয়ে আসা হবে বাড়িতে।

ফয়সালের বাল্যবন্ধু সাজ্জাদ হোসেন কাজল বলেন, ‘ফয়সাল আমার ছোটবেলার বন্ধু ছিল। আমরা একসাথে ছোটবেলা থেকে খেলাধুলা করেছি। একসাথে প্রাথমিক বিদ্যায় ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেছি। খেলার মাঠ, রাস্তায় বাইসাইকেল চালানোর কথাগুলো মনে পড়লে চোখ ভিজে যায়।’

প্রতিবেশী মো. মাসুদ পারভেজ (৪২) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমরা যখন কলেজে পড়ি তখন ফয়সাল ১০-১২ বছরের ছিল। কলেজে কোনো অনুষ্ঠান থাকলে সে আমাদের সঙ্গে থাকত। আমাদের নাট্যদলের সদস্য ছিল ফয়সাল। সব সময় অভিনয়ের মতো করে সবার মুখে হাসি ফুটিয়ে রাখত ফয়সাল। তাঁর অকাল মৃত্যু আমরা মেনে নিতে পারছি না।’

ডামুড্যা মুসলিম পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক মো. আলী আজগর বলেন, ‘আমার প্রিয় ছাত্র ছিল ফয়সাল। বিদ্যালয়ের খেলার টিমের অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করত সে (ফয়সাল)।’ কথাগুলো বলতে বলতে কেঁদে ফেলেন তিনি।

ফয়সালের খালাতো ভাই মো. জাকির হোসেন সুমন বলেন, ঢাকা থেকে তার মরদেহ গ্রহণ করার পর তাঁর কর্মস্থল বৈশাখী টেলিভিশনে নেওয়া হবে। সেখানে জানাজা শেষে লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেওয়া হবে। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ডামুড্যার পূর্ব মাদারীপুর বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে তাঁর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হবে।