গরু চুরির অভিযোগে যুবলীগের দুই নেতা গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে গরু চুরির অভিযোগে যুবলীগের দুই নেতাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে স্থানীয় লোকজন। আজ মঙ্গলবার তাঁদের দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. আবু জাফর (৪০) এবং ইউনিয়নের ছয় নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি ও ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো. শাহাবুদ্দিন ব্যাপারী (৩৭)।

স্থানীয় লোকজন জানায়, চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নে গত শনিবার রাতে গরু চুরি করতে গিয়ে মো. ইউনুছ (৪৫) নামের এক ব্যক্তি হাতেনাতে ধরা পড়েন। ওই সময় তাঁর সঙ্গে থাকা অপর চোর পালিয়ে যান। যাওয়ার সময় পলাতক চোরের ব্যবহৃত মুঠোফোনটি পড়ে যায়। স্থানীয় লোকজন ওই মুঠোফোন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানের কাছে জমা দেন। ফোনটি ছিল ইউপির ছয় নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি শাহাবুদ্দিন ব্যাপারীর।

চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইউপি সদস্যসহ অন্যদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মিছিল করে দুই শতাধিক এলাকাবাসী।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ইউনুছকে আটকের পরে তাঁর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী আরো ছয়টি চোরাই গরু উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে তিনটি ইউনিয়নের চরকচুয়া গ্রামের মো. হাফিজুর রহমানের (২৫) কাছ থেকে এবং তিনটি ডিয়ারা কচুয়া গ্রামের আবুল হোসেন প্যাদার (৪২) কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়। আর ইউনুছকে ইউপি চেয়ারম্যানের জিম্মায় দেওয়া হয়। পরের দিন বাউফল থানার পুলিশ গিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় নিয়ে যায়।

হাফিজুর ও আবুল হোসেন জানান, কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য শাহাবুদ্দিন ওই গরুগুলো ভাগ-রাখালী হিসেবে লালন-পালন করার জন্য তাঁদের কাছে রেখে আসেন।

আটক ইউনুছের বরাত দিয়ে ইউপি চেয়ারম্যান আলকাছ মোল্লা জানান, শনিবার রাতে ইউপি সদস্য শাহাবুদ্দিন ইউনুছকে ডেকে নিয়ে যান। রাত সোয়া ১০টার দিকে ডিয়ারা কচুয়া গ্রামের ইউনুছ জোমাদ্দারের (৪৮) গোয়ালঘর থেকে একটি গরু নিয়ে যাচ্ছিলেন ইউনুছ ও শাহাবুদ্দিন। ওই সময় গরুর মালিক ইউনুছ জোমাদ্দার দেখে চিৎকার শুরু করেন। স্থানীয় লোকজন এসে হাতে-নাতে ধরে ফেলেন ইউনুছকে। ততক্ষণে শাহাবুদ্দিন পালিয়ে যান। পালিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর ব্যবহৃত মুঠোফোনটি পড়ে যায়। স্থানীয়রা তাঁর (চেয়ারম্যান) কাছে এটি জমা দেন।

ওই রাতেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে রোববার বাউফল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. কবির হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে চুরির ঘটনার সঙ্গে জড়িত ইউনুছকে থানায় নিয়ে যান। আর উদ্ধার হওয়া ছয়টি চোরাই গরু ছয় নম্বর ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ মো. হাবিবুর রহমানের জিম্মায় রেখে যান।

ইউপি চেয়ারম্যান আলকাছ মোল্লা জানান, উদ্ধার হওয়া ছয়টি গরু তাঁর এলাকার না। ধারণা করা হচ্ছে, পাশের ভোলা জেলা থেকে চুরি করে আনা হয়েছিল।

গরু চুরির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে স্থানীয় লোকজন গতকাল রোববার রাতে ইউপি সদস্য শাহাবুদ্দিন ব্যাপারী ও আজ সোমবার সকালে যুবলীগ নেতা আবু জাফরকে আটক করে পুলিশের কাছে সোপর্দ করে।

বাউফল থানার এসআই কবির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, গরু চুরির ঘটনার সঙ্গে ইউনুছ, যুবলীগ নেতা জাফর ও ইউপি সদস্য শাহাবুদ্দিনের জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। শাহাবুদ্দিনের মুঠোফোন জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে।