পাবনায় শিলাবৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি, আহত অর্ধশত

Looks like you've blocked notifications!

পাবনার পাঁচ উপজেলায় হঠাৎ ঝড়ো হাওয়া ও নজিরবিহীন শিলাবৃষ্টিতে আম লিচু, ভুট্টা, সবজিসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শিলাবৃষ্টির কারণে ঘরের টিন ফুটো হয়ে শিশুসহ অর্ধশত মানুষ আহত হয়েছে।

আজ শুক্রবার বিকেল ৫ টা থেকে ৬টা পর্যন্ত এই ঝড়ো হাওয়া ও ভারি শিলাবৃষ্টি হয়। আহতদের পাবনা জেনারেল হাসপাতালসহ বিভিন্ন উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে।

চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক খোরশেদ আলম বলেন, ‘চাটমোহরে শিলাবৃষ্টি থামার পর পরই একের পর এক আহত রোগী হাসপাতালে আসতে থাকে। আমরা তাদের চিকিৎসা দিতেই হিমশিম খাওয়ার মতো অবস্থা।’ রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত অর্ধশত জনকে চিকিৎসা দিয়েছি বলেও জানান তিনি।

চাটমোহর উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, ‘আমার জীবনে এ ধরনের শীলা বৃষ্টি দেখি নাই। আমার এলাকার উঠতি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হলো; লিচু ও আমের কুড়ি ঝড়ে গেছে।’ তিনি বলেন, অনেক বাগান মালিকই এবার চরমভাবে লোকসানের মুখে পড়বে। উপজেলা পরিষদ থেকে তাৎক্ষণিক জেলা প্রশাসনকে বিষটি অবহিত করা হয়েছে এবং জেলা প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক ক্ষতিগ্রস্থদের একটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে।

ভাঙ্গুড়া উপজেলা সদরের পাটুলীপাড়া মহল্লার বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী রানা হামিদ বলেন, বিকেলে প্রথমে দমকা বাতাস শুরু হয়। পরে তা তীব্র আকার ধারণ করে। এরপরেই শুরু হয় ভারি শিলাবৃষ্টি। এতে করে আমাদের এলাকাসহ উপজেলার অসংখ্য ঘরবাড়ির টিনের চালা ফুটো হয়ে গেছে।

চাটমোহর পৌর এলাকার ব্যবসায়ী রনি রায় বলেন, ‘আমার জীবনের দেখা প্রথম এমন শিলাবৃষ্টি যা স্মরণকালের ভারি শিলাবৃষ্টি। এতো বড় শিলাবৃষ্টি আমি দেখি নাই।’

সাথিয়া উপজেলার নাগডেমরা গ্রামের বাসিন্দা দিনমজুর সোলায়মান মিয়া (৫৫) বলেন, ‘আমি এর আগে কখনও এমন ভারি শিলাবৃষ্টি দেখিনি। আমার তিনটি টিনের ঘরের চালা ফুটো হয়ে গেছে।’

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর পাবনার উপ-পরিচালক বিভূতি ভূষণ সরকার বলেন, ‘বিকেলের শিলাবৃষ্টির পর পরই আমাদের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ক্ষয় ক্ষতির পরিমান নিরুপনরে জন্যে। এখনো সেটা আমাদের হাতে এসে পৌঁছেনি।’

পাবনার জেলা প্রশাসক মো. জসিম উদ্দিন বলেন, পাবনা জেলার পাঁচটি উপজেলায় ঝড়ো হাওয়া ও ভারি শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে। সুজানগর ও চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা এরই মধ্যে মাঠে গিয়ে খোঁজখবর নিয়েছেন। সুজানগরে ৯৮টি ঘর ভেঙে গেছে সেখানে শুকনা খাবার পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে সকল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিসা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। দ্রুত ক্ষয়ক্ষতির তালিকা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠানোর চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।