চট্টগ্রামের জব্বারের বলি খেলা হলো পাবনায়
চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলি খেলা দেখে মুগ্ধ পাবনার হাজারো দর্শক। শনিবার বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত পাবনার সরকারি এডওয়ার্ড বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত হয় জব্বারের বলি খেলা।
মহান স্বাধীনতা দিবস পালন উপলক্ষে পাবনা জেলা কৃষক লীগের আয়োজনে ঐতিহ্যবাহী জব্বারের বলি খেলায় হাজারো মানুষের ঢল নামে। বিকেলে এই খেলার উদ্বোধন করেন ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফ ডিলু।
বলি খেলায় চট্টগ্রাম অঞ্চলের ২৩ জন ও পাবনার ২০ জন অংশ নেন। নকআউট পর্বের খেলায় চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন চট্টগ্রামের জীবন আলী। রানার্স আপ হয়েছেন পাবনার আবদুল লতিফ।
আয়োজকরা জানান, ৫০ এর দশকে পাবনায় নিয়মিত কুস্তি খেলা হতো। বলি খেলার অপর নাম কুস্তি খেলা। কার কত শারীরিক শক্তি তা নির্ণয় হতো এই খেলার মধ্য দিয়ে। চট্টগ্রামের বলি বা কুস্তি খেলাটি এখন সারা দেশে জনপ্রিয়। পাবনা জেলা কৃষক লীগ বিলুপ্ত প্রায় এই খেলার আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানান উপস্থিত দর্শকরা।
এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন লতিফ গ্রুপের চেয়ারম্যান আলহাজ আবদুল লতিফ বিশ্বাস, এডওয়ার্ড কলেজের অধ্যক্ষ ড. হুমায়ুন কবির মজুমদার, পাবনা সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ মোশাররফ হোসেনর ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও কৃষক লীগের নেতারা।
উপস্থিত প্রাক্তন খেলোয়াড় তরুন দাস মদন বলেন, আমরা যে সময় খেলাধুলা করেছি খুব কষ্ট করেছি। এখন বাবা মা অভিভাবকরা বাচ্চাদের খেলতে নিয়ে আসে। তবে অভিভাবকদের সচেতনতার অভাবে আমাদের তরুণ সমাজ যারা আগামীদিনের দেশের ভবিষ্যৎ তারা অনেকেই নেশা করে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। আমাদের সবার দায়িত্ব হবে বেশি বেশি করে খেলাধুলার প্রতি তরুণদের সম্পৃক্ত করা। তা হলে আমরা সুন্দর আগামী দিন পাব। এই আয়োজন সত্যিই খুব ভালো লেগেছে।
পাবনা চেম্বারের সিনিয়র সহসভাপতি আলী মর্তুজা বিশ্বাস সনি বলেন, সুস্থ্য থাকতে হলে খেলাধুলা করতে হবে। আর খেলাধুলা করতে হলে শক্তির প্রয়োজন। সংস্কৃতি ও খেলাধুলা পারে সুন্দর আগামী দিন উপহার দিতে। শুধু দিবস ভিত্তিক খেলাধুলার অয়োজন না করে প্রতিনিয়ত এই ধরনের আয়োজন হলে তরুণ সমাজ উপকৃত হবে।
আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও পাবনা জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিকুর রহমান তৌফিক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এই খেলা আয়োজনের পরিকল্পনা ছিলো। চট্টগ্রামে এই খেলা বেশ জনপ্রিয়। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খেলা আমরা আজ হারাতে বসেছি। খেলাধুলা করলে মন ভালো থাকে। নেশা থেকে যুব সমাজকে সরিয়ে আনতে আমাদের এই আয়োজন। গ্রামাঞ্চলে আগে আমরা ঈদের সময়ে এই খেলার আয়োজন করতাম। দীর্ঘদিন এই খেলা আর আমাদের এই জেলাতে হয় না। এখন থেকে প্রতি বছর আমরা এই খেলার আয়োজন করব। এর পাশাপাশি আমরা একটি কুস্তি দল গঠন করছি যারা আমাদের জেলাতে বিভিন্ন জায়গায় এই খেলা দেখাতে পারে। এই আয়োজনের সঙ্গে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান।