‘হুইল চেয়ার প্রয়োজন নেই, হেঁটেই যেতে পারব’

Looks like you've blocked notifications!

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আজ শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডের কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) নেওয়া হয়। হাসপাতালের উচ্চপর্যায়ের একটি মেডিকেল টিম খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে। প্রায় দুই ঘণ্টা ধরে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর দুপুর দেড়টার দিকে সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফের কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এসব বিষয় নিয়ে পরে দুপুরে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বিএসএমএমইউর পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন। তিনি বলেন, বেলা সাড়ে ১১টার দিকে খালেদা জিয়াকে কারা কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে নিয়ে আসে। তখন আগে থেকেই প্রস্তুত করে রাখা কেবিন ব্লকের পঞ্চম তলায় ৫১২ রুমে ওনাকে নেওয়া হয়। সেখানে ওনার ব্যক্তিগত চিকিৎসকসহ চারজন চিকিৎসক স্বাস্থ্যের খোঁজ-খবর নেন।

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন আরো বলেন, পরে পঞ্চম তলার কেবিনের রুম থেকে খালেদা জিয়াকে নিচে নিয়ে রেডিওলজি বিভাগে এক্স-রের জন্য নেওয়া হয়। এক্স-রের রুমে নেওয়ার আগে খালেদা জিয়াকে বলা হয়েছে, আপনার জন্য হুইল চেয়ার প্রস্তুত আছে। এর জবাবে বেগম খালেদা জিয়া বলেন, ‘আমি হেঁটেই যেতে পারব। হুইল চেয়ার প্রয়োজন নেই।’ তারপর উনি হেঁটে লিফট দিয়ে নিচে নামেন। সেখান থেকে হেঁটে এক্স-রের জন্য রেডিওলজি বিভাগে যান।

খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্যের ব্যাপারে এক প্রশ্নের জবাবে বিএসএমএমইউর পরিচালক বলেন, ‘আপাতদৃষ্টিতে তাঁকে দেখে মনে হলো তিনি সুস্থ আছেন। অনেক পথ তিনি বেশ ভালোভাবেই হাঁটলেন। সবার সঙ্গে কথা বললেন।’

‘খালেদা জিয়ার ঘাড়ে ও পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছয় থেকে সাতটি এক্স-রে করা হয়েছে। আগামীকাল আমরা সব এক্স-রে পরীক্ষার রিপোর্ট হাতে পাব। তারপর আগামীকালই আমরা রিপোর্টগুলো কারাগার কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাব।’

‘এরপর হয়তো কারা কর্তৃপক্ষ রিপোর্টগুলো মেডিকেল বোর্ডের কাছে হস্তান্তর করবে। সেই অনুযায়ী হয়তো খালেদা জিয়ার চিকিৎসা চলবে’, যোগ করেন পরিচালক।

এর আগে সকালে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য উচ্চ পর্যায়ের একটি মেডিকেল টিম গঠন করা হয় বলে জানান বিএসএমএমইউর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া। তিনি জানান, এই বোর্ডে যাঁরা আছেন তাঁরা নিবিড়ভাবে তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখবেন।

পরে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এনটিভি অনলাইনকে জানান, খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ড রয়েছেন- ড. ওয়াহিদুজ্জামান, ড. এস এম সিদ্দিকী ও মামুন রহমান। খালেদা জিয়ার চাহিদানুযায়ী তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক মামুন রহমানকে চেকআপ করার অনুমতি দেয় কারা কর্তৃপক্ষ।

ব্যক্তিগত চিকিৎসকের ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, খালেদা জিয়া চেয়েছিলেন ব্যক্তিগত চিকিৎসক থাকুক, আমরা সেই ব্যবস্থা করেছিলাম।’

এর আগে গত ১ এপ্রিল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অর্থোপেডিকস বিভাগের অধ্যাপক মো. শামসুজ্জামান শাহীনের নেতৃত্বে চার সদস্যের একটি চিকিৎসকদল কারাগারে গিয়ে খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন।

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড হয়। এরপর পুরান ঢাকার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা দিয়ে খালেদা জিয়াকে সেখানে রাখা হয়।