মা-বাবার পাশে চিরঘুমে রাজীব

Looks like you've blocked notifications!

রাজধানীতে দুই বাসের রেষারেষিতে ডান হাত হারানো তিতুমীর কলেজের ছাত্র রাজীব হোসেনের মরদেহ মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হয়েছে।

আজ বুধবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে উপজেলা সদরের দাসপাড়ায় নানা লাল মিয়ার বাড়িতে তাঁকে দাফন করা হয়।

এর আগে মঙ্গলবার গভীর রাতে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার গ্রামের বাড়ি পৌঁছে রাজীবের মরদেহ।

বাউফল থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, আজ সকাল সোয়া ৯টায় বাউফলের পাবলিক মাঠে শেষ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক ড. মাছুমুর রহমান, পুলিশ সুপার মইনুল হাসান, রাজীবের ছোট দুই ভাইসহ সর্বস্তরের হাজারো মানুষ জানাজায় অংশ নেয়।

গত সোমবার দিবাগত রাত ১২টা ৪০ মিনিটে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজীব মারা যান। পরে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে হাইকোর্ট প্রাঙ্গণে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বিকেলে পটুয়াখালীর উদ্দেশে রওয়ানা হয় রাজীবের লাশবাহী গাড়ি।

গত ৩ এপ্রিল বিআরটিসির একটি দোতলা বাসে দাঁড়িয়ে যাচ্ছিলেন রাজধানীর মহাখালীর সরকারি তিতুমীর কলেজের স্নাতক দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র রাজীব হোসেন। ওই সময় তাঁর ডান হাতটি বাসের সামান্য বাইরে ছিল। হঠাৎই পেছন থেকে স্বজন পরিবহনের একটি বাস বিআরটিসির বাসের গা ঘেঁষে ওভারটেক করার সময় রাজীবের ডান হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। পথচারীদের সহায়তায় তাঁকে দ্রুত শমরিতা হাসপাতালে নেওয়া হয়। এরপর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

রাজীবের পরিবারের সদস্যরা জানান, বাউফল উপজেলার ইন্দ্রকূল গ্রামে রাজীবের জন্ম এক দরিদ্র পরিবারে। খেটে খাওয়া বাবার আয়ে টানাপড়নে চলত রাজীবদের সংসার। মা নাসিমা বেগম মারা যান ১৫ বছর আগে আর বাবা হেলাল উদ্দিন ছয় বছর আগে মারা যান। এরপর পরিবারে রাজীব আর আর তাঁর ছোট দুই ভাইয়ের অভিভাবক বলতে কেউ ছিল না।

তখন এতিম তিন শিশুকে দেখভালোর দায়িত্ব নেন উপজেলার দাসপাড়া গ্রামের তাদের নানা লাল মিয়া। সেখানেই রাজীবের স্কুলজীবন। রাজীবের খালা জাহানারা বেগম ঢাকায় জিপিওতে চাকরি করেন। তিনি তিনজনের লেখাপড়ার দায়িত্ব নেন। সেই সুবাদেই রাজীব তিতুমীর কলেজে ভর্তি হন। আর অন্য ছোট দুই ভাই ঢাকার একটি মাদ্রাসায় ভর্তি হয়।