রানা প্লাজায় নিহতদের স্মরণে

স্বজনকে নিয়ে ‘স্মৃতি কাঁথা’, কাল প্রদর্শনী

Looks like you've blocked notifications!
কাঁথা ও রুমালে নিহত স্বজনদের স্মরণ। আগামীকাল রানা প্লাজার সামনে এসব শিল্পকর্মের প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। ছবি : সংগৃহীত

সবুজ রুমালে সূঁচের কাজ। এদিক ওদিক কমলা রঙের সুতায় আঁকা ফুল। মাঝে সাদা জমিন। জমিনের ওপর রাব্বীর একটা পাসপোর্ট সাইজের ছবি। ছবিটা রুমালের একেবারে মাঝে। ছবিটির নিচে লেখা, ‘দুঃখীনি মা রাহেলা।’

রাব্বী রানা প্লাজায় অবস্থিত একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। ২০১৩ সালের ২৪ এপ্রিল সকালে রানা প্লাজা ধসে পড়ে। নিহত হন এক হাজারেরও বেশি শ্রমিক। রাব্বী ছিলেন তাঁদেরই একজন। রাব্বীর মা রাহেলা ছেলের স্মরণে রুমালের ওপর করেছেন ওই কাজ।

রানা প্লাজা ধসে নিহত কয়েকজনের স্বজনরা নিহতদের স্মরণে এমন কাঁথা ও রুমাল তৈরি করেছেন। ওই দুর্ঘটনায় আহত কয়েকজন শ্রমিকও এ ধরণের কাঁথা ও রুমাল তৈরি করেছেন।

এসবেরই প্রদর্শনী হবে আগামীকাল শুক্রবার সাভারে রানা প্লাজার সামনে। আগামীকাল বিকাল ৪টায় ওই প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতি। সংগঠনটির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘মৃতদের স্মরণ করো, জীবিতদের জন্য লড়াই করো’ এই স্লোগান নিয়ে ছবি-কাঁথা ও কথা নিয়ে ‘স্মৃতি কাঁথা ও কথা’ নামে প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হবে। প্রদর্শনীটির পরিকল্পনা ও কিউরেটিং এ করেছেন যৌথভাবে গার্মেন্ট শ্রমিক সংহতির সভাপ্রধান ও আলোকচিত্রী তাসলিমা আখতার এবং আমেরিকান কাঁথা শিল্পী রবিন বারসন।

কাঁথার ওপর নিহত ও নিখোঁজ শ্রমিকদের ছবি বসিয়ে সেসব কাঁথার ওপর বাংলাদেশের ঐতিহ্য অনুযায়ী নানা অঞ্চলের কাঁথা সেলাই ফোঁড় দিয়ে নিহত শ্রমিক পরিবারের সদস্যরাই তৈরী করেছেন ‘ স্মৃতি কাঁথা ’। একই সঙ্গে নিজ হাতে পরিবারের নিহত সদস্যদের নিয়ে ছোট ছোট রুমালে লিখেছেন নিজেদের মনের নানা কথা। এসব কথায় লুকিয়ে আছে হারানো আপজনের জন্য আকুতি। এই সব কাজ পরিবারের নারী সদস্যরাই সেলাই করেছেন। কেউ নিহতের মা, কেউ বোন, কেউ মেয়ে, স্ত্রী, চাচী বা পরম আত্মীয় বা রানা প্লাজার আহত কোন নারী শ্রমিক।

প্রদর্শনীটি উদ্বোধন করবেন রানা প্লাজা ধসের ঘটনায় নিখোঁজ সমাপ্তি রাণীর মা ও আহত শ্রমিক রুনা রাণী দাস।