সংবাদ সম্মেলনে তালুকদার খালেক

বদির মতো মিজানের বিষয়েও মিডিয়া মিথ্যাচার করছে

Looks like you've blocked notifications!
খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক বক্তব্য দেন। তাঁর পাশে বসে আছেন খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মিজানুর রহমান মিজান। ছবি : এনটিভি

খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মিজানুর রহমান মিজানকে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক) তলব এবং মাদকের পৃষ্ঠপোষকের তালিকায় তাঁর নাম প্রকাশকে ষড়যন্ত্র হিসেবে আখ্যা দিয়েছে ১৪ দল।

আজ শনিবার খুলনা প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ১৪ দলের স্থানীয় নেতারা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী তালুকদার আব্দুল খালেক। প্রকাশিত সংবাদের জন্য তিনি গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি আইনে মানহানির মামলা করার ঘোষণা দেন।

১৪ দলের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পড়ে শোনান মো. খালিদ হোসেন। কোনো গণমাধ্যমের নাম উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘খুলনায় ১৪ দলের সমন্বয়ক আলহাজ মিজানুর রহমান মিজানকে জড়িয়ে নানা কুরুচিপূর্ণ অসত্য তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে, যা ভিত্তিহীন ও বানোয়াট বলে পাঠকের কাছে প্রতীয়মান হয়েছে। এই সংবাদগুলো পড়ে মনে হয়েছে অপেশাদার, উদ্দেশ্যমূলক এবং শুধু সাংসদ মিজান এবং ১৪ দল ও  সরকারের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতেই এসব প্রকাশ করা হয়েছে।’

এ সময় মিজানুর রহমান মিজান বলেন, উড়োচিঠির ভিত্তিতে দুদক তাঁকে তলব করে। সেই চিঠিতে অভিযোগকারীর নির্দিষ্ট কোনো ঠিকানা নাই। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ঢাকায় তাঁর কোনো সম্পত্তি নেই। খুলনায় পৈত্রিক বাড়ি ছাড়া তাঁর বা তাঁর স্ত্রীর নামে কোনো সম্পত্তি নেই।

মাদকের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রশ্নই আসে না উল্লেখ করে মিজানুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে যে তালিকা পাঠানো হয়েছে সেখানে মাদকের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে নয় নম্বরে তাঁর নাম রয়েছে। ওই তালিকায় এমন এমন নাম রয়েছে যা হাস্যকর। তিনি জোর দিয়ে বলেন, বরাবরই তিনি মাদক বিরোধী হিসেবে  পরিচিত। তাঁর জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত হয়ে একটি মহল এই প্রচারণা চালাচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে সংসদ সদস্য আলহাজ মিজানুর রহমান তাঁর বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জন্য সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যমের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইন, মানহানিসহ একাধিক মামলা করার ঘোষণা দেন। 

দুদকে তলব এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে পাঠানো তালিকায় সাংসদ মিজানের নাম থাকা ষড়যন্ত্রের অংশ কি না জানতে চাইলে খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি তালুকদার আব্দুল খালেক সাংবাদিকদের এমন প্রশ্ন এড়িয়ে যান।

তালুকদার আব্দুল খালেক বলেন, নির্বাচনের বছর হওয়ায় গণমাধ্যমে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে নির্বাচনে ব্যাঘাত ঘটাতে। এমনকি কক্সবাজারের জনপ্রিয় এমপি বদির বিরুদ্ধেও মিডিয়ায় মিথ্যাভাবে মাদক ব্যবসার অভিযোগ আনা হয়। একইভাবে মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধেও মাদক ব্যবসার মিথ্যা অভিযোগ আনা হচ্ছে। প্রকৃত বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতা করার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান এই নেতা।

এর আগে গত ১৫ এপ্রিল ‘খুলনায় মাদক ব্যবসায় সাংসদ, পুলিশ, সাংবাদিকের নাম!’ শিরোনামে এনটিভি অনলাইনে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। একই বিষয় নিয়ে দেশের অন্যান্য গণমাধ্যমও সংবাদ প্রকাশ করে।

খুলনায় মরণনেশা মাদক ব্যবসার সঙ্গে ২৭২ জন ব্যক্তির জড়িত থাকার অভিযোগ ওঠে। এঁদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতাদের মধ্যে রয়েছেন আওয়ামী লীগের এক সাংসদ, আরেক সাংসদের দুই ভাই, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ ও মোটরশ্রমিক লীগের নেতা এবং বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধি। এই পুরো মাদক চোরাকারবার ও সরবরাহে প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে সহায়তা করেন ৩৪ জন পুলিশ সদস্য। 

মোট ৩৪৬ জনের এমনই একটি তালিকা সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হয়ে খুলনায় মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কার্যালয়ে পৌঁছেছে। সেই সঙ্গে তালিকায় নাম থাকা ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। 

খুলনা মহানগরে মাদক ব্যবসায়ী/চোরাকারবারিদের পৃষ্ঠপোষক/আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারীদের নাম ও ঠিকানা তালিকায় নয় নম্বরে রয়েছে খুলনা-২ আসনের সাংসদ ও খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ মিজানুর রহমান মান মিজানের নাম।

এই বিষয়ের প্রতিবাদ জানাতেই আজ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।