জেলকোড অনুযায়ী খালেদা জিয়ার চিকিৎসা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

Looks like you've blocked notifications!
আজ রোববার সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন স্বারষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল। এনটিভির পুরোনো ছবি

জেলকোডের বিধান অনুযায়ী এবং সরকারি চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে এবং হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।

আজ রোববার সচিবালয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান মন্ত্রী।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে কারান্তরীণ সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য সমস্যা ও বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর চিকিৎসার বিষয়াদি নিয়ে বিএনপির দুই নেতা আজ সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের সঙ্গে বৈঠক করেন।

আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজউদ্দিন আহমেদ সচিবালয়ে আসেন। তার কিছু পরেই আসেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। বৈঠক চলাকালেই সেখানে এসে উপস্থিত হন কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইফতেখার উদ্দিন। বৈঠক থেকে বেরিয়ে নজরুল ইসলাম খান সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও এ ব্যাপারে গণমাধ্যমের কাছে কথা বলেন। 

বৈঠকে কী নিয়ে আলোচনা হয়েছে—জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপির নেতারা তাঁর (খালেদা জিয়া) শারীরিক অবস্থা তুলে ধরে ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসার কথা বলেছেন। এ বিষয়ে আমি কারা মহাপরিদর্শককে ডেকে এনেছি, কথা বলেছি। যাঁরা চিকিৎসা দিচ্ছেন, তাঁদের সঙ্গে তিনি কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন। আমরা জানি, খালেদা জিয়ার পায়ে যে সমস্যা আছে, এগুলো বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী তাঁকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে। চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তিনি চিকিৎসায় সহায়তা করছেন। আরো যদি কোনো ব্যবস্থা নিতে হয়, তার জন্য সেটাও আমরা নেব।’

এ ছাড়া ২৫ এপ্রিল জাতীয় প্রেসক্লাব ও নয়াপল্টনে মানববন্ধন এবং ১ মে শ্রমিক সমাবেশের কথা বিএনপির নেতারা বলেছেন বলে জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘আমি তাদের বলেছি সভা-সমাবেশ করার অধিকার গণতান্ত্রিক। সব রাজনৈতিক দলেরই তা আছে। তবে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি দেখে অন্য সংস্থা এগুলোর অনুমোদন দিয়ে থাকে। এখন তারা যদি নিরাপদ মনে করে, তাহলে অনুমতি দেবে। আমার কিছু করার নেই।’

বিএনপির চেয়ারপারসনকে প্যারোলে মুক্তি দিয়ে বিদেশে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হবে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে  মন্ত্রী বলেন, ‘এ নিয়ে আমরা ভাবছি না। তিনি একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রী, একটি বৃহত্তর রাজনৈতিক দলের প্রধান। এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে জেলকোডের বিধান অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

খালেদা জিয়ার সঙ্গে দলের নেতা ও আত্মীয়স্বজনদের দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না, বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, ‘জেলকোডের বিধান অনুযয়ী একজন কারাবন্দি সঙ্গে দেখা করার একটা ডিউরেশন (সময়সীমা) আছে। সেইটা অনুযায়ী দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে। তা ছাড়া খালেদা জিয়াও অনেকের সঙ্গে দেখা করতে চান না। তিনি বিরক্ত হতে পারেন বা তাঁর সমস্যা হতে পারে এই বিষয়গুলো মাথায় রেখেও সবাইকে দেখা করতে দেওয়া হয় না।’

গত ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায় ঘোষণা করেন বিশেষ আদালতের বিচারক ডা. মো. আখতারুজ্জামান। রায়ে তিনি সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেন। এ ছাড়া বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং দুই কোটি ১০ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়।

রায় ঘোষণার পর থেকেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পুরোনো কারাগারে আছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) কাজী সলিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এঁদের মধ্যে তারেক রহমান, কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী ও মমিনুর রহমান পলাতক।