নরসিংদী প্রেসক্লাব সিলগালা করেছে প্রশাসন

Looks like you've blocked notifications!

নরসিংদী প্রেসক্লাবের নির্বাচন নিয়ে সাংবাদিকদের মধ্যে দ্বিধাবিভক্তি চরম পর্যায়ে পৌছেছে। এরই জের ধরে আজ রোববার সাংবাদিকদের দুই পক্ষ প্রেসক্লাবে মুখোমুখি অবস্থান নেয়। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রেসক্লাব সিলগালা করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন।

সাংবাদিকরা জানায়, সম্প্রতি প্রেসক্লাবের নির্বাচন নিয়ে বিরোধে জড়িয়ে পড়েন সাংবাদিকরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে মোর্শেদ শাহারিয়ার ও শফিকুল মোহাম্মদ মানিকের নির্বাচিত কমিটিকে হটিয়ে বহিরাগতদের সহায়তায় প্রেসক্লাব দখল নেন নিবারন রায়ের নেতৃত্বে কয়েকজন সাংবাদিক। তাঁরা নিবারণ রায়কে আহ্বায়ক করে কমিটি করে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেন। অপরদিকে সাংবাদিকদের একটি বৃহৎ অংশ গত ৯ এপ্রিলে বিশেষ সভা ডেকে আরেকটি আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করেন। মোর্শেদ শাহরিয়ারের সভাপতিত্বে ৪৮ জনের মধ্যে ৩১ জন সদস্যের উপস্থিতে বেনজির আহমেদ বেনুকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের পাল্টা কমিটি গঠন করা হয়। 

এরই পরিপ্রেক্ষিতে নিবারণ রায়ের আহ্বায়ক কমিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি মোরশেদ শাহারিয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল মো. মানিক, আহ্বায়ক বেনজির আহমেদ বেনুসহ ১২ জনকে সদস্য তালিকা থেকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরু করে। অপরদিকে সাধারণ সভার মাধ্যমে নিবারণ রায়, মাজহারুল পারভেজ, আসাদুল হক পলাশ, এ কে ফজলুল হক ও নুরুল ইসলামকে বহিষ্কার করা হয়।

এ পরিস্থিতিতে এক তরফা নির্বাচন রুখতে রোববার  মোর্শেদ শাহারিয়ার, শফিকুল মো. মানিক, বেনজির আহমেদ বেনু, হাবিবুর রহমান ও এম এ আওয়ালের নেতৃত্বে প্রেসক্লাবের প্রায় ২৬ জন সদস্য প্রেসক্লাবে প্রবেশ করেন। ওই সময় প্রেসক্লাব থেকে বহিরাগতদের বের করে দিয়ে তাঁরা প্রেসক্লাবে অবস্থান নেন। 

খবর পেয়ে নিবারন গ্রুপের সদস্যরা প্রেসক্লাবে এসে প্রধান ফটকের বাইরে তালা ঝুলিয়ে দেন। ওই সময় কিছু বহিরাগত লোকজন এসে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেন।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি হওয়ার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ আলম মিয়া ও শাহরুখ খাঁন এবং নরসিংদী সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার শাহরিয়ার আলম, মডেল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সালাউদ্দিন আহম্মেদ ও পরিদর্শক (অপারেশন) মোজাফ্ফর হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তাঁরা উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রেসক্লাব সিলগালা করে দেন।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহ আলম মিয়া বলেন, নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রেসক্লাবের অস্থিতিশীল পরিবেশ কারো কাম্য নয়। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসন কখনো প্রেসক্লাবের কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী নয়। কিন্তু দুই পক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণে যেকোনো সময় সাংবাদিকদের মধ্যে অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটতে পারে বলে আমরা আশঙ্কা প্রকাশ করছি। এরই পরিপ্রেক্ষিতে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রেসক্লাব সিলগালা করা হলো। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো পক্ষই প্রেসক্লাবে প্রবেশ করতে পারবে না। বিষয়টি উভয়পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সমাধানের জন্য শিগগিরই জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।