দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর বুড়াগৌরাঙ্গ নদে চালু হচ্ছে ফেরি সার্ভিস

Looks like you've blocked notifications!
পটুয়াখালীর গলাচিপায় বুড়াগৌরাঙ্গ নদে আজ বুধবার ফেরি সার্ভিস চালু করা হবে। ছবি : এনটিভি

বুড়াগৌরাঙ্গ নদে ফেরি সার্ভিস চালুর মাধ্যমে পটুয়াখালী ও ভোলা জেলার চার উপজেলার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন পাঁচটি ইউনিয়নের অত্যন্ত ৭০টি গ্রামের আড়াই লাখ মানুষ সড়ক নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হতে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনের একটি চাওয়া পূরণ হতে যাচ্ছে।

আজ বুধবার নৌপরিবহন মন্ত্রী মো. শাজাহান খান ও সংসদ সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইন আনুষ্ঠানিকভাবে এ ফেরি সার্ভিস উদ্বোধন করবেন।

জানা গেছে, পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার অন্যতম বিপৎসঙ্কুল নদ বুড়াগৌরাঙ্গ। বছরের বেশির ভাগ সময় নদটি উত্তাল থাকে। প্রায় আট কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এ নদটির উৎসমুখ বঙ্গোপসাগরে গিয়ে যুক্ত হয়েছে। ফলে সামান্য বায়ুপ্রবাহে নদটি হিংস্র হয়ে ওঠে। এখানে বহুবার নৌযান দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে।

২০০৫ সালে লঞ্চডুবিতে শতাধিক যাত্রী মারা যায়। নদটি পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চরকাজল, চরবিশ্বাস, দশমিনা উপজেলার চরবোরহান, রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ও ভোলা জেলার চরফ্যাশন উপজেলার মুজিবনগর ইউনিয়নের প্রায় ৭০টি গ্রামকে মূল ভূখণ্ড থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে।

এসব এলাকার মানুষ উপজেলা থেকে জেলা সদরে যাতায়াতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। চিকিৎসার জন্য উপজেলায় পৌঁছানোর আগেই নৌকায় মারা যাওয়ার নজিরও কম নেই বলে জানিয়েছেন চরের ভুক্তভোগীরা। দিনের বেলা নদটিতে ঝুঁকিপূর্ণ খেয়া পারাপারের কোনো রকম ব্যবস্থা থাকলেও রাতে তা পুরোপুরি বন্ধ থাকে। ফলে দুর্ভোগ আরো তীব্র হয়।

চরকাজল ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান রুবেল জানান, চরবোরহানে দেশের সর্ববৃহৎ বীজাগার রয়েছে। কৃষকরা প্রয়োজনে ইচ্ছে করলেই সেখানে যেতে পারে না।  উত্তাল নদীতে প্রাণহানির আশংকায় বীজাগার থেকে বীজ সংগ্রহ করতে পারছে না কৃষকরা। দীর্ঘদিনের সে সমস্যা এখন আর থাকবে না।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিসি) বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন উর রশিদ জানান, নৌমন্ত্রীর নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এ রুটে ‘কেতকী’ নামের অত্যাধুনিক ফেরি সার্ভিস চালু করা হচ্ছে। ফেরিতে এক সঙ্গে অত্যন্ত ২০-২৫টি গাড়ি পারাপার করা যাবে।

মামুন উর রশিদ আরো জানান, এরই মধ্যে নদের বদনাতলী ও চরশিবা ঘাটে জেটি স্থাপন করা হয়েছে। নদটিতে কিছু ডুবোচর রয়েছে। তা অপসারণে ড্রেজিং করা শুরু হয়েছে। এ ফেরি সার্ভিস চালুর মধ্য দিয়ে এলাকাবাসীর দীর্ঘ দুর্ভোগের অবসান হতে যাচ্ছে।