প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে সরকারি হাটের জায়গা দখলের অভিযোগ

Looks like you've blocked notifications!
নওগাঁর রাণীনগর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ওরফে বেলাল হোসেন সরকারি হাটের জায়গা দখল করে দেয়াল নির্মাণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা। ছবি : এনটিভি

নওগাঁর রাণীনগর উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ ওরফে বেলাল হোসেনের বিরুদ্ধে কোটি টাকা মূল্যের সরকারি হাটের জায়গা দখল করার অভিযোগ করেছে স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা।

এ বিষয়ে ৪৬ জন স্থানীয় বাসিন্দা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেন, রাণীনগর উপজেলা সদরের খাদ্যগুদামের কাছে বালুভরা মৌজার ১৯২০ সালের রেকর্ডে হাল-১৫৬৩ দাগে (শ্রেণি-হাট) ৫০ শতাংশ হাটের জায়গা ছিল। আগে সেখানে বৃহস্পতিবার ও রোববার সপ্তাহে দুইদিন হাটবার ছিল।

কিন্তু হঠাৎ করে ১৯৬২ সালের রেকর্ডে ওই দাগে ৪৬ শতাংশ ও ১৯৭২ সালের রেকর্ডে ৪৬ শতাংশ জায়গা ওই শিক্ষকের বাবা অবৈধভাবে নিজ নামে রেকর্ড করে নেয় বলে স্থানীয়দের অভিযোগ। তারা অভিযোগ করেন, জায়গাটি নিজ নামে নেওয়ার পর এই শিক্ষকের বাবা জমির উত্তর দিকে ও পূর্ব দিকে বাড়ি করে। সম্প্রতি, আবুল কালাম আজাদ জমির দক্ষিণ দিকে নতুন করে দেয়াল তুলে পুরো জায়গাটা অবৈধভাবে দখল করার চেষ্টা করছেন। এছাড়াও ১৯২০ সালের রেকর্ডের সরকারি হাটের জায়গা তাদের নিজের নামে দলিল ছাড়া কিভাবে রেকর্ড হয় তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অভিযোগকারীরা।

এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা আনছার আলী, রমজান আলী ও বকুল হোসেনসহ বেশ কয়েকজন অভিযোগকারী বলেন, দীর্ঘদিন যাবত আবুল কালাম আজাদের পরিবার অবৈধভাবে ওই জায়গায় বাড়ি করে ভোগদখল করে আসার পরও তারা কোনো বাধা দেননি। কিন্তু আজাদ নতুন করে হাটের অবশিষ্ট জায়গা দখল করে দেয়াল করার সময় বিষয়টি প্রশাসনকে জানানো হয়। এরপর দেয়াল তৈরির কাজ বন্ধ করে। কিন্তু এই নির্মাণ কাজ আবারো শুরু করার অনুমতি প্রশাসন কিভাবে দেয় তা জানা নেই।

তবে এই অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করছেন প্রধান শিক্ষক আবুল কালাম আজাদ। তিনি বলেন, ‘স্থানীয়দের অভিযোগ মিথ্যা। বরং রমজান নামের এক  ব্যক্তি অবৈধভাবে আমার জায়গায় বসবাস করে আসছে। আর প্রশাসন অনুমতি দিয়েছে বলেই আবারও কাজ শুরু করেছি।’

অভিযোগকারীদের মধ্যে রমজান নামে ব্যক্তিও ওই জায়গায় বসবাস করেন। তিনিও এই জায়গার মালিকানা দাবি করছেন।

স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান পিন্টু বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে জমির কিছু পুরাতন কাগজপত্র এসেছে। সেখানে ওই জমিটি হাটের জায়গা বলে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু ওই শিক্ষক কোন আইন ও কাগজপত্রের জোরে হাটের জায়গাটি ভোগদখল করে আসছে তা আমার জানা নাই। ওই শিক্ষক ইউএনও ও স্থানীয় কয়েকজন নেতাকে ম্যানেজ করে পেশিশক্তির জোরে সরকারের কোটি টাকা মূল্যের জায়গা জবরদখল করেছেন।’

এ বিষয়ে ইউএনও সোনিয়া বিনতে তাবিব বলেন, ‘বিষয়টির তদন্ত চলছে। অভিযোগ পাওয়ার পর ওই শিক্ষককে ওই জায়গায় প্রাচীর নির্মাণসহ কোনো প্রকারের নতুন স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য বলা হয়েছে। যদি উনি জোর করে প্রাচীর নির্মাণ করে থাকেন, তাহলে বিষয়টি নিষ্পত্তি হওয়ার পর যদি জায়গাটি সরকারি বলে গণ্য হয়ে থাকে তখন তার নির্মাণ করা সব স্থাপনা ভেঙে দিয়ে জায়গাটি দখল মুক্ত করা হবে।’