বাসচাপায় নাজিমের মৃত্যু, দুজন রিমান্ডে

Looks like you've blocked notifications!

রাজধানীর যাত্রাবাড়ীতে হানিফ ফ্লাইওভারে বাসের ধাক্কায় ঢাকা ট্রিবিউনের বিজ্ঞাপন বিভাগের কর্মকর্তা নাজিম উদ্দিন নিহতের ঘটনায় দুই আসামিকে একদিন করে রিমান্ড দিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম প্রণব কুমার হুই এ আদেশ দেন।

ঢাকার অপরাধ, তথ্য ও প্রসিকিউশন বিভাগের উপকমিশনার আনিসুর রহমান এনটিভি অনলাইনকে জানান, গত ২০ মে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা যাত্রবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ইকবাল হোসেন আসামি দুজনকে হাজির করে সাত দিন রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করেন। ওইদিনই আদালত আজ রিমান্ড শুনানির দিন ধার্য করেন। এর আগে গত ১৮ মে তাঁদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওই দিনই আদালত আসামিদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আনিসুর রহমান জানান, আজ রিমান্ড শুনানি উপলক্ষে শ্রাবণ সুপার বাসের চালক মো. ওহিদুল (৩৫) ও মনজিল এক্সপ্রেস বাসের সহকারী মো. কামালকে (৩২) ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে রিমান্ড শুনানি উপলক্ষে হাজির করা হয়।

রিমান্ড আবেদন থেকে জানা যায়, আসামিরা প্রায়ই বেপরোয়া ও দ্রুত গতিতে গাড়ি চালিয়ে থাকে। ঘটনার দিন ও সময়ে  বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে তারা জানায়। তাই মামলার তদন্তের স্বার্থে এবং পলাতক আসামির নাম-ঠিকানা জানতে আসামিদের রিমান্ড আবশ্যক। পরে বিচারক রিমান্ড শুনানি শেষে আসামিদের একদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নথি থেকে জানা যায়, গত ১৭ মে সকালে রাজধানীর শ্যামপুর থেকে মোটরসাইকেলযোগে কর্মস্থলে যাওয়ার পথে নাজিম দুর্ঘটনার শিকার হন। মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারে উঠতেই মঞ্জিল ও শ্রাবণ পরিবহনের দুটি বাসের রেষারেষির মুখে পড়েন তিনি।

শ্রাবণ পরিবহনের বাসটি নাজিমের মোটরসাইকেলটিকে পেছন থেকে ধাক্কা দেয়। এতে তিনি ছিটকে পড়ে যান। ওই সময় বাসটি তাঁর বুকের ওপর দিয়ে চলে যায়।

ওই ঘটনায় ১৭ মে রাতেই নাজিমের ভায়রা আবদুল আলিম যাত্রাবাড়ী থানায় মামলাটি দায়ের করেন। নাজিম ঢাকা ট্রিবিউন পত্রিকার বিজ্ঞাপন বিভাগের সিনিয়র এক্সিকিউটিভ ছিলেন।

রাজধানীর শ্যামপুরের করিমোল্লাবাগ ২২৭/৩ ফরিদাবাদের ভাড়া বাসায় থাকেন নাজিম উদ্দিন ও তাঁর পরিবার। ভোলা জেলার লালমোহন থানার বালুরচর গ্রামে নাজিমের বাড়ি। চার বোন তিন ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন চতুর্থ।

নাজিম উদ্দিনকে উদ্ধার করে যারা হাসপাতালে নিয়ে আসে, তাদের মধ্যে আলী নওয়াজ হোসাইন নামে এক ব্যক্তি জানান, যাত্রাবাড়ীর শনির আখড়া থেকে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ওপর দিয়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে গুলিস্তানের দিকে যাচ্ছিলেন নাজিম উদ্দিন। তাঁর পেছনে একটি বাস ছিল। ফ্লাইওভারের ওপরে এক লেনের রাস্তা হলেও ওই বাসটি মোটরসাইকেলটিকে ওভারটেক করার চেষ্টা করছিল। একপর্যায়ে বাসটি মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে পড়ে গিয়ে চালক নাজিম উদ্দিন গুরুতর আহত হন।

আরেক প্রত্যক্ষদর্শী মেহেদী হাসান শরীফ বলেন, ‘আমিও মোটরসাইকেলে করে ফ্লাইওভার দিয়ে আসছিলাম। উনি আমার সামনে ছিলেন। পিছন থেকে বাসে ধাক্কা মেরেছে। ধাক্কা মারার পর বাস ওভারটেক করে চলে যায়। এ সময় তিনি পড়ে যান। তখন উনার প্রচুর ব্লিডিং হচ্ছিল। সিএনজিতে উঠানোর সময় উনি শুধু একবার মুভ করেছেন। এরপর চুপ হয়ে যান।’

দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল মর্গে নাজিম উদ্দিনের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়। ফরেনসিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ তাঁর ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন। তিনি জানান, নাজিমের পায়ে ও বুকে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রচুর রক্ত ক্ষরণে তাঁর মৃত্যু হয়।