অপহৃত তিনজন উদ্ধার, দুই শাশুড়িসহ ‘অপহরণকারী’ গ্রেপ্তার

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় তিনজনকে অপহরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার তিনজন। ছবি : এনটিভি

গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায় তিনজনকে অপহরণের নয় দিন পর চট্টগ্রাম থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক অপহরণকারী ও তাঁর দুই শাশুড়িকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকালে পুলিশ চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানাধীন সুজাকাঠঘর এলাকা থেকে অপহরণকারী চক্রের হোতা মোস্তফা কামাল ভাবনকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে একই এলাকার পরিত্যক্ত টিনশেডের একটি কক্ষ থেকে অপহৃত তিনজনকে উদ্ধার করে পুলিশ। 

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার পশ্চিম আবদুল্লাহপুর গ্রামের মোস্তফা কামাল ভাবন (২৪), ভাবনের শাশুড়ি একই উপজেলার দাড়িয়াকান্দি গ্রামের সোহেনা (৩৫) ও চাচি শাশুড়ি রিতা (৩৫)। গ্রেপ্তার হওয়া তিনজন গাজীপুরের টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুর এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন।

কাপাসিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবু বকর সিদ্দিক ও অপহৃতদের স্বজনরা জানান, কাপাসিয়া উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের শ্যামপুর গ্রামের সহিদ (১৩), মো. ইকবাল মোড়ল (১৭) ও মো. সোহাগ মিয়া (১৯) বেশ কিছুদিন ধরে কাজের সন্ধান করছিল। হঠাৎ তাদের সঙ্গে মোস্তফা কামাল ভাবনের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্রধরে ভাবন তাদের জুতা তৈরির কারখানায় চাকরি দেওয়ার কথা বলে কৌশলে গত ১৫ মে দুপুরের দিকে তাদের যাত্রীবাহী বাসে উঠিয়ে কাপাসিয়া থেকে টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুর এলাকায় নিয়ে যান। সেখানে ভাবন ও তাঁর সহযোগীরা একটি বাসায় তাদের আটকে রেখে মারধর করে এবং মুক্তিপণ দাবি করে। এ সময় অপহৃত কিশোরদের অভিভাবকদের কাছে মোবাইলে ফোন করে অপহরণকারীরা জানায়, সড়ক দুর্ঘটনায় ওই তিন কিশোর মারাত্মকভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। তাদের বাঁচাতে হলে দ্রুত টাকা পাঠাতে হবে। তাদের কথামতো তিন কিশোরের অভিভাবক অহরণকারীদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে ২১ হাজার টাকা পাঠায়। পরবর্তীতে অপহরণকারীরা আরো টাকা দাবি করে। কিশোরদের সন্ধানে তাদের স্বজনরা বিভিন্নস্থানে খোঁজাখুঁজি করতে থাকে।

নিখোঁজ কিশোরদের সন্ধান না পেয়ে গত ১৯ মে অপহৃত সোহাগ মিয়ার বাবা ফরিদ মিয়া কাপাসিয়া থানায় একটি মামলা করেন। একপর্যায়ে পুলিশের তৎপরতা টের পেয়ে অপহরণকারীরা চেতনানাশক দ্রব্য খাইয়ে অপহৃতদের টঙ্গী থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে যায়।

এদিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাপাসিয়া থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মনির হোসেনের নেতৃত্বে থানার একদল পুলিশ বুধবার ভোররাতে টঙ্গীর পূর্ব আরিচপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে সোহেনা ও রিতাকে গ্রেপ্তার করে। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ও মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ বৃহস্পতিবার সকালে চট্টগ্রাম মহানগরের সুজাকাঠঘর এলাকা থেকে  অপহরণকারী চক্রের মূলহোতা ভাবনকে গ্রেপ্তার করে। এ সময় তাঁর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওই এলাকার পরিত্যক্ত টিনশেডের একটি কক্ষ থেকে অপহৃত ওই তিনজনকে উদ্ধার করা হয়।