ডেসটিনি অবলুপ্তি প্রশ্নে নোটিশের ওপর আদেশ কাল

Looks like you've blocked notifications!

ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড কোম্পানির অবসায়ন বা অবলুপ্তি প্রশ্নে হাইকোর্টের কারণ দর্শানোর নির্দেশ স্থগিত চেয়ে করা আবেদনের বিষয়ে শুনানি শেষ হয়েছে। এ বিষয়ে আগামীকাল সোমবার আদেশ দিবেন আপিল বিভাগ।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানটির করা আবেদনের ওপর শুনানি শেষে আজ  রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আপিল বেঞ্চ এ দিন ধার্য করেন।

আদালতে ডেসনিটির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ। জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন এ কে এম বদরুদ্দোজা।

গত ১৫ মে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেড কোম্পানীটি অবসায়ন বা অবলুপ্তি করার কেন নির্দেশ দেওয়া হবে তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।

হাইকোর্টের এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেন ওই কোম্পানির পরিচালক লে.জে.এম হারুন-অর-রশীদ ও পাঁচ ‘শেয়ার হোল্ডার’। ২১ মে চেম্বার আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে ২৭ মে পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। সে অনুযায়ী আজ শুনানি শেষে আদেশের জন্য ২৮ মে দিন ধার্য করেন আদালত।

হাইকোর্টের আদেশের পর জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের পক্ষে আইনজীবী এ কে এম বদরুদ্দোজা জানিয়েছিলেন,২০০০ সালের ১৪ ডিসেম্বর রেজিস্টার্ড হওয়া কোম্পানীটির ২০১২ সাল থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত বর্ষগুলোর বার্ষিক সাধারণ সভা বিলম্বের মার্জনা চেয়ে ওই কোম্পানির পরিচালক লে.জে.এম হারুন-অর-রশীদ ও অন্য পাঁচজন হাইকোর্টে আবেদন করেন।

হারুন-অর-রশীদ ছাড়া অন্য পাঁচজন হলেন, কাজী মোহাম্মদ আশরাফুল হক,মো. সাইফুল আলম রতন, সিরাজুম মুনীর, মো.জাকির হোসেন, বিপ্লব বিকাশ শীল।

আবেদনে বিবাদী করা হয়েছে, জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজ অ্যান্ড ফার্মসের রেজিস্টার ও ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডকে।

হাইকোর্টের আদেশের পর এ কে এম বদরুদ্দোজা বলেন, ‘আইন অনুসারে প্রতি ইংরেজি পঞ্জিকা-বছরে বার্ষিক সাধারণ সভা করতে হয়। এতে ব্যর্থ হলে কোম্পানির যেকোন সদস্যের আবেদনক্রমে, আদালত উক্ত কোম্পানির বার্ষিক সাধারণ সভা আহ্বান করতে অথবা আহ্বান করার নির্দেশ দিতে পারিবে এবং আদালত উক্ত সভা আহ্বান অনুষ্ঠান ও পরিচালনার জন্য যেরূপ সমীচীন বলিয়া বিবেচনা করিবে সেইরূপ অনুবর্তী (consequential) ও আনুষংগিক (incidental)আদেশ প্রদান করতে পারবে।’

এ আইন অনুসারে তাঁরা হাইকোর্টে আবেদন করেন। কিন্তু যে ছয়জন আবেদন করেছেন, তাদের মধ্যে ডেসটিনির সভাপতি ও সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদ শর্ত সাপেক্ষে জামিনপ্রাপ্ত। জামিনের শর্ত ছিলো তদন্ত পর্যন্ত তিনি এ কোম্পানির কোনো কার্যক্রমের সাথে কোনো রকম সম্পর্ক রাখবেন না। আবেদনে তদন্ত শেষ হয়েছে কিনা সে বিষয়ে কিছু বলা নাই। ফলে তিনি আবেদন করতে পারেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। এছাড়া তাদের এজিএমের আবেদনে উল্লেখ আছে ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত কোম্পানির কোনো অডিট নেই। অডিট রিপোর্ট না থাকলে বার্ষিক সাধারণ সভা কীভাবে হবে?

এ কে এম বদরুদ্দোজা আরও বলেন, ‘আবেদনে তাঁরা বলেছেন দুদকের মামলায় সমস্ত সম্পদ জব্দকৃত এবং সে সম্পদ তত্ত্বাবধানে তত্ত্বাবধায়কও নিয়োজিত আছেন। ফলে কার্যত কোম্পানি হিসেবে এর কোনো কর্মকাণ্ড নেই। এছাড়া সাত পরিচালকের মধ্যে ২০১২ সালের অক্টোবর থেকে কোম্পানির পরিচালক রফিকুল আমীন ও মোহাম্মদ হোসেন জেলে আছেন। চারজন পলাতক। এছাড়া তদন্ত চলাকালে অপর পরিচালক হারুন-অর-রশীদ এ কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ করবেন না, এমন শর্তে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। দুদকের কারণে ছয় বছর ধরে কোম্পানির কার্যক্রম প্রায় বন্ধ। এখন পরিচালক ছাড়া এজিএম হবে কিভাবে?’

এ কারণে আদালত এজিএমের বিষয়ে আদেশ না দিয়ে কোম্পানিটি অবসায়ন করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে ডেসটিনি-২০০০ লিমিটেডের প্রতি কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছেন বলে জানান এ কে এম বদরুদ্দোজা।