‘আটকের’ পাঁচ দিন পর ‘ক্রসফায়ারে’, জিডি করতে বলেছিল ডিবি

Looks like you've blocked notifications!

সারা দেশে মাদকবিরোধী অভিযানের অংশ হিসেবে সাতক্ষীরায়ও ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহতের ঘটনা ঘটেছে। গত পাঁচ দিনে পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে চারজন নিহত হয়েছেন। তাঁরা সবাই মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করেছে পুলিশ।

সর্বশেষ গতকাল রোববার রাতে সদর উপজেলার ভোমরা সড়কের বাঁকালের পাশের আগুনপুর গ্রাম থেকে দুই ব্যক্তির গুলিবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁরা হলেন- সদর উপজেলার ভোমরা গ্রামের খলিলুর রহমান পুটে (৫০) এবং শহরের মধু মোল্লাডাঙ্গির এমদাদ (৪৮)।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার গভীর রাতে  কলারোয়া উপজেলার বড়ালি রামকৃষ্ণপুর সীমান্তে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইউনুস আলী  দালাল নামের এক ব্যক্তি নিহত হন বলে দাবি করেছে পুলিশ। ইউনুস উপজেলার দক্ষিণ ভাদিয়ালি গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, তিনি একজন চিহ্নিত মাদক কারবারি। তাঁর বিরুদ্ধে কলারোয়া থানায় কয়েকটি মাদক মামলা রয়েছে।

এ ছাড়া গত বুধবার কালীগঞ্জ উপজেলার ভাড়াসিমলা ইউনিয়নের চৌবাড়িয়া গ্রামে সিদ্ধেশ্রী পুকুরের কাছে রাস্তার ধার থেকে আবদুল আজিজ নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার পরানদহা গ্রামের বাসিন্দা। পুলিশের দাবি, তিনি একজন মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে কয়েকটি মাদকের মামলা রয়েছে।

গতকাল রোববার রাতের ‘বন্দুকযুদ্ধ’ সম্পর্কে সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) প্রবীর কুমার দাসের ভাষ্য হচ্ছে, ‘আজ সোমবার ভোরে খবর আসে যে, বাঁকালের পাশে আগুনপুরে দুটি লাশ পড়ে রয়েছে। পুলিশ সেখানে যায়। লাশ দুটির প্রত্যেকের দেহে একটি করে গুলির চিহ্ন রয়েছে। পাশেই পাওয়া গেছে একটি ওয়ানশুটার গান ও ১০৫ বোতল ফেনসিডিল। এ ছাড়া মদের খালি বোতলও পাওয়া গেছে।’

উপপরিদর্শক আরো দাবি করেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, মাদকের ভাগাভাগি নিয়ে নিজেদের মধ্যে গোলাগুলির একপর্যায়ে দুজন নিহত হন। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ দুটি সাতক্ষীরা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’

তবে নিহতদের একজন শহরের মধু মোল্লাডাঙ্গির এমদাদের পরিবার বলছে ভিন্ন কথা।

আজ সোমবার সকালে এমদাদের ভাই মফিদুল ইসলাম এবং এমদাদের স্ত্রী তাসলিমা খাতুন অভিযোগ করেন, গত বুধবার তারাবির নামাজের পর সাদা পোশাকধারী কয়েক ব্যক্তি এমদাদকে তাঁর বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায়। তাঁকে ফিরে পাওয়ার জন্য পরিবারের লোকজন খোঁজ-খবর শুরু করেন। একপর্যায়ে তাঁরা সাতক্ষীরা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের কার্যালয়ে যান।

তবে সেখান থেকে এমদাদের স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়, ডিবি পুলিশ তাঁকে আটক করেনি। এ ব্যাপারে তাঁরা কিছুই জানেন না। ডিবির পক্ষ থেকে এমদাদকে খুঁজে পেতে থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার পরামর্শ দেওয়া হয় পরিবারের সদস্যদের। যদিও পরিবারের সদস্যরা জিডি করেননি।

এর মধ্যেই আজ সোমবার ভোরে এমদাদের লাশ উদ্ধারের খবর পান তাঁর স্ত্রী।

সারা দেশে চলমান ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনায় গত ১২ দিনে ৯৬ জন নিহত হয়েছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে এদের সবাইকে মাদক ব্যবসায়ী বলে দাবি করা হলেও বিচারবহির্ভূতভাবে হত্যার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমালোচনাও করা হচ্ছে।