শান্তি মিশনে নিহত আরজানের বাড়িতে শোকের মাতম

Looks like you've blocked notifications!

জাতিসংঘ মিশনের আওতায় মধ্য আফ্রিকা প্রজাতন্ত্রের ইয়ালোকে দায়িত্ব পালনের সময় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত আরজান হাওলাদারের ফরিদপুরের গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম।  

গত শনিবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যা পৌনে ৭টায় কনভয়ের কাঠ বহনকারী একটি ভারী যান নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে পড়ে গেলে এ দুর্ঘটনায় আরজান হাওলাদার ছাড়া আরো এক বাংলাদেশি নিহত হন। কিন্তু আরজানের পরিবার খবরটি পায় গতকাল রোববার। তার পর থেকেই পরিবারের সদস্যদের আহাজারিতে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

আরজান ফরিদপুর সদরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের চর ব্রাক্ষণদী গ্রামের মৃত করিম হাওলাদারের ছেলে। গ্রামের বাড়িতে আরজানের স্ত্রী চায়না আক্তার, ছেলে ফাহিম আহমেদ, মা রহিমা খাতুন ও দুই বোন থাকেন। আরজানের ছোট ভাই সিলেটে একটি কোম্পানিতে কাজ করেন। তিনি ছিলেন সবার বড়।

আজ সকালে আরজানের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, একমাত্র ছেলে ফাহিম আহমেদ ছোট্ট পাসপোর্ট ছবি হাতে নিয়ে বাবার দিকে নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

আরজানের স্ত্রী চায়না আক্তার জানান, গত ২৬ এপ্রিল সকালে শহর থেকে ক্যাম্পে যাওয়ার সময় গাড়িতে বসে ভিডিওকলের মাধ্যমে আরজানের সঙ্গে তাঁর ও একমাত্র ছেলের কথা হয়। তিনি বলেন, ‘তিনি জানিয়েছিলেন ক্যাম্পে পৌঁছে আমাকে আবার ফোন করবেন। কিন্তু তাঁর আর ফোন এলো না।’

আরজানের লাশ দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী।

নিহতের চাচা টুকু হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের পরিবারের একমাত্র আশা-ভরসার প্রতীক ছিলেন আরজান। তাঁর মৃত্যুতে অনেক স্বপ্নের মৃত্যু হয়ে গেল। যাওয়ার আগে সে সবার সঙ্গে দেখা করে গেছে। তাঁর মতো এমন ভালো ছেলে এই গ্রামে খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর। এখন সরকার দ্রুত আরজানের লাশ নিয়ে আসবে ও পরিবারের দিকে একটু লক্ষ রাখবে, এই আশা করছি।’

গতকাল রোববার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হতাহত ব্যক্তিদের সবাই জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে নিয়োজিত বাংলাদেশ ব্যাটালিয়ন-৪ (ব্যানব্যাট-৪)-এর সদস্য ছিলেন। তাঁরা একটি কনভয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন।

২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নিয়োজিত রয়েছে বাংলাদেশ ব্যাটালিয়ন। আহত শান্তিরক্ষীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের রাজধানী বাঙ্গুই শহরে নেওয়া হয়েছে।