বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি

‘আসামিরা টক শো করে অথচ গ্রেপ্তার হচ্ছে না’

Looks like you've blocked notifications!
হাইকোর্টে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান। ছবি : এনটিভি

রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারির ৫৬ মামলার তদন্ত আড়াই বছরেও শেষ করতে না পারায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্ত কর্মকর্তাদের প্রতি ক্ষোভ জানিয়েছেন হাইকোর্ট।

বিচারপতিরা বলেন, আসামিরা নির্বিঘ্নে বিভিন্ন টক শো, রাজনৈতিক কর্মসূচি এবং বড় বড় আনুষ্ঠানে যাচ্ছেন, অথচ তাঁদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে না। এর আগেও আদালত অন্য মামলায় কিছু নির্দেশনা দিয়েছিলেন। যা বাস্তবায়ন করেনি দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা। তাই কালো কাপড় দিয়ে মুখ ঢেকে রাখতে ইচ্ছে করছে বলেও মন্তব্য করেন বিচারপতিরা।

আজ বুধবার বুধবার দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা হাইকোর্টের তলবে হাজির হলে শুনানিতে এসব কথা বলেন বিচারপতিরা।

বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাদের তলব করলে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি সহিদুল করিমের হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চে তাঁরা হাজির হন।

শুনানির একপর্যায়ে একজন বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘পরিচালনা পর্ষদের কর্মকর্তারা যারা ঋণ অনুমোদন করেছেন তাঁদের কেন এসব মামলায় আসামি করা হলো না?’ রাঘব বোয়ালরা ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছেন বলেও বিচারপতিরা উল্লেখ করেন।

বিচারপতিরা জানতে চান, আড়াই বছরের বেশি সময় পার হলেও ৫৬ মামলার একটিরও কেন তদন্ত সম্পন্ন হয়নি। এ ছাড়া ব্যাংকের ক্রেডিট কমিটি ঋণ না দেওয়ার প্রস্তাব করলেও পরিচালনা পর্ষদ কীভাবে তা অনুমোদন করল। আর এসবের পরও কেন ব্যাংকটির তৎকালীন চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ অন্য কর্মকর্তাদের আসামি করা হলো না- তাও জানতে চান আদালত।

আসামিদের গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তাদের পছন্দ প্রাধান্য পেয়েছে বলেও মন্তব্য করেন আদালত। আদালত মন্তব্য করেন, ‘একজন কৃষক পাঁচ হাজার টাকার ঋণ ফেরত দিতে না পারলে তাঁকে কোমরে রশি দিয়ে বেঁধে আনা যায়। অথচ রাঘববোয়ালদের ছেড়ে দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়।’

দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘আবদুল হাই বাচ্চুর নাম তো এফআইআরে নাই। আবদুল হাই বাচ্চুকে ইনটারোগেশন করা হচ্ছে। অনেক বোর্ড মেম্বারের নাম এফআইআরে নাই। কিন্তু তাঁদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তাঁদের ডাকা হচ্ছে। যারা আসতে পারছে না ওখানে গিয়ে তাঁদের স্টেটমেন্ট নিচ্ছে। কাজেই এখনো তো শেষ হয়ে যায়নি। যদি অভিযোগপত্র দাখিল হয়ে যেত তখন আপনার কথা যুৎসই ছিল।’ 

খুরশিদ আলম খান বলেন, ‘আদালত আরো একটি জিনিসে হতাশা প্রকাশ করেছেন। বোর্ড মেম্বারে কিছু ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আছেন সেখানে আপনারা কী স্টেপ (পদক্ষেপ) নিয়েছেন? বিজ্ঞ আদালতে আমাদের টিম লিডার বলছেন, ওনাদেরকে আমরা  নোটিশ দিয়েছি। ওনারা আসেন নাই। তখন আদালত বলছেন, যদি না আসে আইনত বিধান আছে। সে আইনের বিধান অনুযায়ী আপনি পদক্ষেপ গ্রহণ করুন।’