মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার, কারা হেফাজতে মৃত্যু

Looks like you've blocked notifications!
সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে বাবুল বিশ্বাসের লাশ। ছবি : এনটিভি

সুনামগঞ্জে মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তারের তিনদিন পর কারা পুলিশের হেফাজতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে মারা গেলেও বিষয়টি প্রকাশ পায় আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১টার দিকে।

নিহত ব্যক্তির নাম বাবুল বিশ্বাস (৩৫)। তিনি জেলার দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার জয়কলস গ্রামের বাসিন্দা।

বাবুলের পরিবারের দাবি, তাঁর সঙ্গে মাদকের কোনো সম্পর্ক ছিল না। তিনি সম্পূর্ণ নির্দোষ।

জেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মাদকবিরোধী অভিযানে গ্রেপ্তার মাদক মামলার আসামি বাবুল বিশ্বাসকে গত রোববার রাতে জেলহাজতে পাঠানো হয়। গতকাল বুধবার রাত ৮টার দিকে হঠাৎ করে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে বাবুল বিশ্বাস মারা গেছেন।

নিহতের স্ত্রী দিপালী বিশ্বাস অভিযোগ করেন, বাবুল কোনো মাদকের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। অন্যদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব থাকায় তাঁকে মাদক মামলায় ফাঁসানো হয়েছে।

দিপালীর অভিযোগ, জেলহাজতে নির্যাতন করে তাঁর স্বামীকে মেরে ফেলা হয়েছে। বাবুল বিশ্বাসের চায়ের দোকান ছিল। তাঁর পাশে আলী হোসেন নামের একজন মাদক ব্যবসা করতেন। তাঁর সঙ্গে বাবুলের দ্বন্দ্ব ছিল, তারই জের ধরে বাবুলকে ধরে নিয়ে গিয়ে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ দিপালীর।

মাদক অভিযানে দায়িত্বে থাকা দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিয়াউর রহমান জানান, গত রোববার রাত ৮টার দিকে সদরপুর গ্রামে মদ পানের সময় বাবুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় তাঁর কাছে আরো চার লিটার মদ পাওয়া যায়।

সুনামগঞ্জ কারাগারের জেল সুপার মো. আবুল কালাম আজাদ জানান, বাবুল বিশ্বাস বুকে প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করায় বুধবার রাতে আমরা তাঁকে দ্রুত হাসপাতালে পাঠাই। সেখানে নেওয়ার পথেই তিনি মারা যান।

জেলা সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) ডা. মো. রফিকুল ইসলাম জানান, তাঁদের কাছে পৌঁছার আগেই বাবুল মারা যান। ফলে ময়নাতদন্ত শেষেই জানা যাবে তাঁর মৃত্যুর আসল কারণ।

এদিকে বাবুল বিশ্বাস নিহত হওয়ার খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এর প্রতিবাদে এলাকাবাসী আজ দুপুরে সুনামগঞ্জ-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করে রাখেন। পরে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ওসি) মো. হারুন অর রশীদ ও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইখতিয়ার উদ্দিন ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিলে তারা অবরোধ তুলে নেন।