পাল্টা মামলা করেই পলাতক রাশেদের খালু!

Looks like you've blocked notifications!
রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকার মানিকদীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে হামলায় নিহত রাশেদ (বাঁয়ে) ও হত্যা মামলার পলাতক আসামি তাঁর খালু মোফাজ্জল হোসেন। ছবি : সংগৃহীত

রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট থানা এলাকার মানিকদীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে খালু ও খালাতো ভাইয়ের হামলায় আহত যুবক রাশেদের মৃত্যুর ঘটনায় একটি হত্যা মামলা হয়েছে।

ওই হামলায় আহত রাশেদের মা জহুরা আক্তার লাকি বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেছেন। ঘটনায় অভিযুক্ত রাশেদের খালাতো ভাই প্রান্ত ও সাইফুলকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রাশেদের প্রতিবেশী মিজানুর রহমান জানান, রাশেদের খালু মোফাজ্জল হোসেন ও খালাতো ভাইরা তাদের জমি দখল করে বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করতেই এই হামলা চালায়। রাশেদের মা-বাবাকে কুপিয়ে জখম করে। রাশেদ খুব ভালো ছেলে ছিলেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

নিহত রাশেদের ছোট বোন তানজুম আফরিন এশা জানান, তাঁর নানার কাছ থেকে জমিটি কিনে নেন তাঁর বাবা এরশাদুল্লাহ ও খালু মোফাজ্জল হোসেন। একই জমির ওপর দুটি বাড়ি। একটি ফটক দিয়েই দুই বাড়িতে প্রবেশ করতে হয়। জমি কেনার যাবতীয় দলিল ও কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও তাঁর খালু দীর্ঘদিন ধরে তাঁদের ওই বাড়ি থেকে উচ্ছেদ করে জমিটি দখল করতে চায় । খালুর দাবি, ওই পুরো জমির মালিক সে। সেখানে থাকতে হলে ভাড়া দিয়ে থাকতে হবে। খালুর এমন আচরণের কারণে খালার সঙ্গে এক বছর আগে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে বলেও জানান এশা। 

এশা আরো জানান, সবশেষ গত ২৩ মে ইফতারের আগে খালু মোফাজ্জল, তাঁর দুই ছেলে প্রান্ত ও সাইফুল, দুই মেয়ে মুনিয়া ও অর্পা হঠাৎ তাদের বাসায় ঢুকেই দরজা বন্ধ করে দেয়। সঙ্গে চাপাতি, লাঠি ও রড নিয়ে আসে। কয়েক পদের ইফতারও নিয়ে আসে। এ সময় তাঁর খালু জানান, এই বাসায় থাকতে হলে ভাড়া দিতে হবে।

এ নিয়ে কথাবার্তার একপর্যায়ে তাঁরা এশাকে মারধর করে। এতে এশার মা-বাবা বাধা দিতে গেলে দুজনেরই মাথায় চাপাতি দিয়ে কোপ দেয়। কিছুক্ষণ পর রাশেদ বাইরে থেকে এসে দেখে ঘরের দরজা বন্ধ, ভেতরে চিৎকার-চেঁচামেচি। তখন সে জোরে ধাক্কা দিয়ে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় তারা রাশেদকেও কুপিয়ে জখম করে চলে যায়।

পরে আশপাশের লোকজন এসে তাদের উদ্ধার করে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ২ জুন রাশেদ মারা যান।

বোন এশা জানান, ঘটনার দিন তাঁরা থানায় মামলা করতে গেলে প্রথমে পুলিশ মামলা নিতে চায়নি। পরে রাত আড়াইটার দিকে মামলা নেয়। কিন্তু তার কিছুক্ষণ পরই খালু মোফাজ্জলের করা পাল্টা মামলাও নেয় ক্যান্টনমেন্ট থানা।

রাশেদের মৃত্যুর পর তাঁর মায়ের দায়ের করা মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে রেকর্ড করা হয়েছে।

এ বিষয়ে ক্যান্টনমেন্ট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন হাওলাদার জানান, রাশেদের খালু মোফাজ্জল পলাতক। তাঁর ছেলে ও ভাতিজাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আর ঘটনার পর যেহেতু মোফাজ্জলও কিছুটা আহত অবস্থায় থানায় এসেছিল তাই তার মামলাও নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, রাশেদের মৃত্যুতে ফুঁসে উঠেছে এলাকাবাসী। এর প্রতিবাদে স্থানীয় ইউসিবি চত্বরে বেশ কয়েকবার মানববন্ধন করা হয়েছে।