পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় যাত্রীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরা নিয়ে শঙ্কা বিআইডব্লিউটিসির

Looks like you've blocked notifications!

ঈদের ছুটিতে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি ফেরা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বিআইডব্লিউটিসি। নিরাপদে যাত্রী পারাপার উপলক্ষে শনিবার দুপু‌রে পাটুরিয়া ঘাটে জেলা প্রশাসকের কন্ট্রোল রুম ‘মোহনা’য় আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ আশঙ্কার কথা জানান বিআইডব্লিউটিসির সহকারী মহাব্যবস্থাপক জিল্লুর রহমান।

জিল্লুর রহমান বলেন, বিগত সময়ে ঈদের আগে লম্বা ছুটি ছিল। যাত্রী পারাপারে সমস্যা থাকলেও তার সমাধান করা সম্ভব হয়েছে। এবারের ঈদের আগে লম্বা ছুটি না থাকায় ঈদের দুই দিন আগে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার যাত্রী ও গাড়ির চাপ বেড়ে যাবে। যানবাহনের লাইন পাটুরিয়া ঘাট থেকে টেপড়া পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ হতে পারে।

সহকারী মহাব্যবস্থাপক বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে বর্তমানে সাতটি রো রো, ছয়টি ইউটিলিটি ও চারটি কে টাইপ ফেরি চালু আছে। আগামী দুই দিনের মধ্যে এই রুটে আরো দুটি রো রো ফেরি যুক্ত হবে। তবে আরো একটি রো রো ফেরি থাকলে সুবিধা হতো।

জিল্লুর রহমান বলেন, ফেরিগুলো পুরাতন থাকায় মাঝে মধ্যে মাঝে তা কারখানায় মেরামতে থাকে। এছাড়া ভিআইপিদের পারাপারে জন্য একটি ফেরি রিজার্ভে রাখতে হয়। এসব কারণে ঈদের আগে অতিরিক্ত যাত্রী ও গাড়ি সময় মতো ফেরিতে পারাপার করা কষ্টকর হবে।

জেলা প্রশাসক মো. নাজমুছ সাদাত সেলিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান, বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তাবৃন্দ।

বিআইডব্লিউটিএর ট্রাফিক ইন্সপেক্টর ফরিদুল আলম বলেন, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও আরিচা কাজিরহাট নৌরুটে মোট ৩৩টি লঞ্চ চালু আছে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ১৮টি আর বাকিগুলো আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে চলছে। আরিচা ঘাট হয়ে পাবনার যাত্রীদের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। এই রুটে অনুমোদনহীন ১৭টি স্পিডবোট রয়েছে। লঞ্চ ও স্পিডবোটে কোনোরকমে পারাপার করা যাবে। তবে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকলে ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হতে পা‌রে।

শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান বলেন, রাজবাড়ীর দৌলতদিয়ায় অব্যবস্থাপনার কারণে সমস্যা আরো বেড়ে যায়। 

এ প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার রিফাত রহমান শামীম বলেন, ঘাটের আইনশৃঙ্খলা ও ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের মানিকগঞ্জ জেলার অংশে পুলিশ, আনসারসহ পাঁচ শতাধিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত থাকবে। তবে ফেরিতে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করতে না পারলে তার কিছুই করার থাকবে না। তিনি বলেন, মাওয়া রোডে যানজট থাকায় দেশের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর ছোট গাড়িগুলো পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া রুট ব্যবহার করছে। এভাবে ছোট গাড়ির চাপ বাড়তে থাকলে ফেরি পারাপারে সমস্যা হবে। তবে ঘাট এলাকায়, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কোনো অবনতি ঘটবে না বলে জানান তিনি।

জেলা প্রশাসক মো. নাজমুছ সাদাত সেলিম বলেন, পাটুরিয়া ঘাটে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১০ থেকে ২০ জুন সার্বক্ষণিক অফিস খোলা থাকবে।অতিরিক্ত ভাড়া বন্ধসহ সব ধরনের অনিয়ম বন্ধে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সার্বক্ষণিক মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করবেন। মেডিকেল টিম প্রস্তুত থাকবে।

লঞ্চে যাত্রীদের জীবন রক্ষাকারী সরঞ্জাম নিশ্চিত করা এবং অতিরিক্ত যাত্রী বহন করতে না পারে সেদিকে সতর্ক থাকতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।