ঈদে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলা, অভিযোগপত্র হয়নি দুই বছরেও
![](https://ntvbd.com/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2018/06/15/photo-1529070585.jpg)
কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় ঈদগাহসংলগ্ন এলাকায় ঈদুল ফিতরের দিন জঙ্গি হামলার ঘটনায় করা মামলায় দুই বছরেও অভিযোগপত্র দেয়নি পুলিশ।
২০১৬ সালে ঈদুল ফিতরের জামাতের সময় ওই হামলা হয়। জানা যায়, তদন্ত শেষ না হওয়ায় এখনও অভিযোগত্র দেয়নি পুলিশ। কবে নাগাদ তদন্ত শেষ হবে এ নিয়ে নির্দিষ্ট করে না বললেও দ্রুত অভিযোগপত্র দেওয়া হবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. মাশরুকুর রহমান খালেদ বলেন, ‘তদন্তের কাজ শেষ পর্যায়ে আছে। তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত নিয়ে বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ চলছে। এসব কার্যক্রম শেষ হলেই অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’
২০১৬ সালের ৭ জুলাই ঈদুল ফিতরের দিন সকালে কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ঈদগাহের অদূরে আজিম উদ্দিন হাইস্কুলের পাশে পুলিশ সদস্যদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায় জঙ্গিরা। এ হামলায় পুলিশের দুই সদস্য, বাড়ির ভেতরে থাকা এক নারী, পুলিশের গুলিতে নর্থ সাউথ ইউনিভার্সিটির ছাত্র আবির রহমান নামের এক ‘হামলাকারী জঙ্গি’সহ চারজন নিহত হয়। ওই ঘটনায় আট পুলিশসহ তিন পথচারী গুরুতর আহত হয়।
হামলার ঘটনায় তিন দিন পর ১০ জুলাই সন্ত্রাস বিরোধী আইনের ছয়টি ধারায় ঘটনাস্থল থেকে আটক দুইজনসহ অজ্ঞাত সংখ্যককে আসামি করে কিশোরগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। পাকুন্দিয়া থানার তৎকালীন পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাম্মদ সামছুদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
ঈদের দিন জঙ্গি হামলার সময় ঘটনাস্থল থেকে শফিউল ইসলাম ওরফে শরিফুল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলাম ও জাহিদুল হক ওরফে তানিম নামের দুই জঙ্গিকে আটক করে পুলিশ। পরে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত শফিউল ইসলাম ওরফে শরিফুল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলামকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।
এই ঘটনার ২৭ দিন পর ৪ আগস্ট ময়মনসিংহে চিকিৎসা শেষে কিশোরগঞ্জ ফিরিয়ে আনার সময় ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয় শরিফুল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলাম (২২)। র্যাব জানায়, রাত ১১টার দিকে দুর্বৃত্তরা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার ঘোষপালা এলাকায় র্যাবের গাড়িবহরে হামলা করে। তখন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় শরিফুল। শরিফুল ইসলাম ওরফে সাইফুল ইসলাম দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার রানীগঞ্জ বাজারের বাসিন্দা।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. আরিফুর রহমান জানান, শোলাকিয়া মাঠে জঙ্গি হামলার মামলায় বর্তমানে জাহিদুল হক ওরফে তানিমসহ পাঁচজন পুলিশের হাতে আটক আছে। বাকি চারজন হচ্ছে জামা’আতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) সংগঠক জাহাঙ্গীর আলম ওরফে রাজীব গান্ধী, জেএমবি সদস্য মিজানুর রহমান ওরফে বড় মিজান, মো. আব্দুস সবুর খান হাসান ওরফে সোহেল মাহফুজ ও আনোয়ার হোসেন। ওই চার আসামি গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলাসহ সারা দেশে পরিচালিত বিভিন্ন জঙ্গি হামলার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার আসামি হিসেবে আটক ছিলেন। পরে তদন্ত শেষে শোলাকিয়া মাঠে জঙ্গি হামলার মামলায় আসামি করে তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
আরিফুর রহমান আরো বলেন, ‘মামলাটি তদন্তাধীন আছে। তদন্ত শেষ হলেই অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।’