মৌলভীবাজারে ৩ লাখ মানুষ পানিবন্দি, নামলো সেনা

Looks like you've blocked notifications!
মৌলভীবাজারের মনু ও ধলাই নদীর ২২টি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, রাজনগর ও সদর উপজেলায়। ছবি : এনটিভি

মৌলভীবাজারে বন্যার সার্বিক পরিস্থিতির ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। মনু নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে যেকোনো মুহূর্তে প্রতিরক্ষা বাঁধ (গাইড ওয়াল) উপচিয়ে বন্যার পানি শহরে প্রবেশ করতে পারে।

গত কয়েকদিন থেকে ভারতের উত্তর ত্রিপুরা এলাকায় বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় মনু, কুশিয়ারা ও ধলাই নদীর পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। মনু ও ধলাই নদীর ২২টি স্থানে প্রতিরক্ষা বাঁধ ভেঙে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে কুলাউড়া, কমলগঞ্জ, রাজনগর ও সদর উপজেলায়। এতে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পানিবন্দি হয়েছে জেলার প্রায় পাঁচশ গ্রামের তিন লাখ মানুষ। তলিয়ে গেছে বাড়িঘরসহ রাস্তাঘাট।

বন্যা কবলিত কুলাউড়া, কমলগঞ্জ ও রাজনগর উপজেলায় উদ্ধারকাজে নেমেছে সেনাবাহিনী। অনেকেই বাসাবাড়ি ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের মালামাল নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন। শহরের গুরুত্বপূর্ণ এম সাইফুর রহমান সড়ক দিয়ে সব ধরনের যাবাহন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মুল্যবান কাগজপত্র উঁচু স্থানে নিয়ে রাখা হচ্ছে।

মনু নদী মৌলভীবাজার শহরের চাঁদনীঘাটের কাছে বিপৎসীমার ১৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অপরদিকে কুশিয়ারা নদী শেরপুরের কাছে ৪০ সেন্টিমিটার এবং কমলগঞ্জে ধলাই নদী বিপৎসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। মনু নদীর শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় শহরবাসীকে সতর্ক থাকতে মাইকিং করা হচ্ছে।

জেলা প্রশাসক মো. তোফায়েল ইসলাম আজ শনিবার সকালে জানান, জেলার তিনটি উপজেলায় সেনাবাহিনী উদ্ধারকাজ করছে। মনু নদীর শহর প্রতিরক্ষা বাঁধের ঝুঁকিপূর্ণ স্থানগুলো গতকাল শুক্রবার রাতে সেনাবাহিনীর একটি প্রতিনিধি দল পরিদর্শন করেছে।

আজ দুপুরের দিকে মনু নদীর শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ রক্ষায় সেনাবাহিনী কাজ শুরু করবে। এ পর্যন্ত ১৪৩ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পানিবন্দি মানুষদের জন্য। এ ছাড়া নগদ এক লাখ ৮০ হাজার টাকা বন্যা আক্রান্ত এলাকায় বিতরণ করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রশাসক।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী রনেন্দ্র শংকর চক্রবর্তী জানান, মনু ও ধলাই নদীর ২২টি স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভারতের উত্তর ত্রিপুরায় প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে মনু নদীর শহর প্রতিরক্ষা বাঁধ উপচিয়ে বন্যার পানি প্রবেশ করে শহর তলিয়ে যেতে পারে।