হবিগঞ্জে যুবলীগ নেতার মৃত্যুতে ২১ জনের বিরুদ্ধে মামলা

Looks like you've blocked notifications!
হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে আজ মঙ্গলবার নিহত আল-আমিন মিয়ার (ইনসেটে) ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়। পরে পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। ছবি : এনটিভি

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় দুই পক্ষের মারামারির ঘটনায় যুবলীগ নেতা আল-আমিন মিয়ার মৃত্যুতে ২১ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে নিহতের ছোট ভাই আলাউদ্দিন মিয়া বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার আসামিদের মধ্যে ১১ জন পুলিশী হেফাজতে রয়েছে। এদের মধ্যে অসুস্থ হয়ে পড়ায় আজমিরীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মিজবাহ উদ্দিন ভূঁইয়া ও তাঁর বড় ভাই জেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কাকাইলছেও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূরুল হক ভূঁইয়াকে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। সেখানে পুলিশী হেফাজতে তাঁদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

আজমিরীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকবাল হোসেন এসব বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বাদী আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, ‘আসামিরা আমার ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে। আমরা তাদের শাস্তি দাবি করছি।’

জানা যায়, আজমিরীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সদস্য প্রয়াত চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতর আলী মিয়ার শূন্য আসনে উপনির্বাচনে দলীয় প্রার্থী নির্ধারণের জন্য গতকাল বিকেলে উপজেলা পরিষদের হলরুমে স্থানীয় আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা আহ্বান করা হয়। ওই শূন্য আসনে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন আতর আলী মিয়ার ছেলে উপজেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি আল-আমিন মিয়া (৩৫)। সভায় দলীয় প্রার্থী কীভাবে মনোনয়ন করা হবে তা নিয়ে মারামারি হলে সেখানে আল-আমিন মিয়া নিহত হন।

ঘটনার পরে হবিগঞ্জ-২ (বানিয়াচং-আজমিরীগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য আবদুল মজিদ খান জানান, সভায় দলীয় প্রার্থী কীভাবে মনোনয়ন করা হবে তা নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে ঝগড়ার সৃষ্টি হয়। তিনি বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপ্রত্যাশী যুবলীগ নেতা আল আমিন হার্টের রোগী ছিল। ঝগড়া চলাকালে হার্ট অ্যাটাকে আল আমিনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।’

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমাও একই কথা বলেছিলেন।

এদিকে, যুবলীগ নেতা আল-আমিনের মৃত্যুতে তাঁর সমর্থকরা ক্ষুব্ধ হয়ে বিকেলে থেকে জেলা আওয়ামী লীগ নেতা নূরুল হক ভূঁইয়া, মিসবাহ উদ্দিন ভূইয়াসহ ১১ জনকে উপজেলা পরিষদের হলরুমে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে হবিগঞ্জ সদর থানা হেফাজতে নিয়ে যায়। ওই ১১ জনসহ ২১ জনকে আসামি করে আজ বিকেলে মামলা করেন নিহতের ছোট ভাই।

হবিগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শৈলেন চাকমা বলেন, ‘যাদের পুলিশী হেফাজতে রাখা হয়েছে, মামলার পরিপ্রেক্ষিতে তাঁদের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি পুলিশ তাঁদের অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধার না করত তাহলে ওই স্থানে ১০টি লাশ পড়ত।’

গতকাল বিকেলে মৃত্যুর পর আজ দুপুরে সদর আধুনিক হাসপাতাল মর্গে নিহত আল-আমিন মিয়ার ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করা হয়।