অত্যাধুনিক দলীয় কার্যালয়ে উঠছে আ. লীগ

Looks like you've blocked notifications!
দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর নতুন দশতলা ভবন হবে আওয়ামী লীগের স্থায়ী ঠিকানা। ছবি : এনটিভি

দেশের স্বাধীনতা-সংগ্রামে নেতৃত্বদানকারী দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠার পর প্রথমবারের মতো নিজস্ব ভবন পেতে যাচ্ছে।

দৃষ্টিনন্দন ও আধুনিক সব সুযোগ সুবিধা সম্পন্ন ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউর নতুন দশতলা ভবন হবে আওয়ামী লীগের স্থায়ী ঠিকানা। আট কাঠা জায়গার উপর ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে নিজস্ব অর্থায়নে নির্মাণ করা হয়েছে বিশ্বমানের দলীয় কার্যালয়টি। পুরো কার্যালয়টি থাকবে ওয়াইফাই জোনের আওতায়।

আওয়ামী লীগের ৬৯তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিন আগামীকাল শনিবার সকাল ১০টায় কেক কাটার মধ্য দিয়ে নতুন ভবনে দলীয় কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দলীয় সূত্র জানায়, আগামীকাল উদ্বোধনের সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতে নতুন কার্যালয়ের চাবি তুলে দেবেন। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন শেষে সভাপতিমণ্ডলী, যুগ্ম সম্পাদকসহ অন্য নেতা ও সহযোগী সংগঠনগুলোর জায়গা নির্ধারণ করে দেবেন।

সরজমিনে দেখা গেছে, দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জন্য রাখা হয়েছে সুপরিসর কক্ষ। দলের সভাপতির কক্ষের সঙ্গে রয়েছে বিশ্রামাগার ও নামাজের জায়গা। এ ছাড়া ডিজিটাল লাইব্রেরি, ভিআইপি লাউঞ্জ, সাংবাদিক লাউঞ্জ, ডরমিটরি ও ক্যান্টিন থাকছে। দুই পাশ কাঁচ দিয়ে ঘেরা। এ ছাড়া দুটি স্বতন্ত্র কার পার্কিং, একাধিক লিফট, সিঁড়ি, অগ্নিপ্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে।

জানা গেছে, ভবনটির ছয় বা সাততলা পর্যন্ত ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগ, কৃষকলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, মহিলালীগসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের অফিস থাকবে।
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, আগামীকাল ২৩ জুন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ওইদিন কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের উদ্বোধন করবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

আওয়ামী লীগের পুরনো অফিস ২৩, বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের চারতলা ভবনটি লিজ গ্রহণ প্রক্রিয়া শেষ হয় ২০১১ সালে। এর পর দলটি নতুন ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তী সময়ে ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল নতুন কার্যালয়ের নতুন ভবনের নকশা অনুমোদন দেন দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা।

২০১৬ সালের ১৭ জুলাই পুরনো স্থাপনা ভাঙা শুরু হয়। রাজধানীর গুলিস্তানের ২৩ বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের ১০তলা আধুনিক কার্যালয়টির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করা হয় গত বছরের ২৩ জুন।

কার্যালয়ের সামনে স্টিলের বড় অক্ষরে লেখা রয়েছে, ‘বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ’। পাশেই দলীয় প্রতীক নৌকা। সবার উপরে রয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল। এরপর রয়েছে মুক্তিযুদ্ধ ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পাকিস্তানি বাহিনীর আত্মসমর্পণের ম্যুরাল। দুই পাশ কাঁচ দিয়ে ঘেরা।

আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নতুন ভবন উদ্বোধনের পর আওয়ামী লীগের সব সাংগঠনিক কার্যক্রম চলবে ২৩, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর এ কার্যালয় থেকে। আর ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয় থেকে দলের নির্বাচনী কার্যক্রম ও সিআরআইসহ দলের অন্যান্য সংস্থার গবেষণামূলক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।

ভবনটির সামনের দেয়ালজুড়ে দলের সাইনবোর্ডসহ দলীয় স্লোগান ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’, চার মূলনীতি খোদাই করে লেখা। ভবনের সামনে-পেছনে ছেড়ে দেওয়া জায়গায় হবে বাগান। এ ভবনের সামনে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় নিহতদের স্মরণে স্থায়ী স্মৃতিসৌধ নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। ভবনটির প্রথম থেকে তৃতীয়তলা পর্যন্ত প্রতিটি ফ্লোর চার হাজার ১০০ বর্গফুট। চতুর্থ তলা থেকে উপরের সব কয়টি তিন হাজার ১০০ বর্গফুটের।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে আওয়ামী লীগের নতুন ভবন উদ্বোধন দলের নেতাকর্মীদের বাড়তি অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। আওয়ামী লীগের নিজস্ব ফান্ড থেকে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ভবনটির নির্মাণ কাজ শুরু করা হলেও নির্মাণ সামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় নির্মাণ খরচ বেশ বেড়েছে বলেও জানান তিনি।