৯০ দিনে অর্ধেক যানজট মুক্ত করব : জাহাঙ্গীর

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুরে নির্বাচনী পথসভায় আজ শনিবার বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। তাঁর পাশে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম। ছবি : ফোকাস বাংলা

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেছেন, গাজীপুরে টঙ্গী-চান্দনা চৌরাস্তা হাইওয়েতে মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে বসে থাকেন। আমি সেই যানজট থেকে আপনাদের মুক্ত করে দেব। আমি নির্বাচিত হওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে ওই পথের ৫০ পারসেন্ট যানজট মুক্ত করে দেব।

আজ শনিবার সকালে নগরীর টঙ্গীর খৈরতুল এলাকার এক পথসভায় এসব কথা বলেন জাহাঙ্গীর আলম।

জাহাঙ্গীর আলম আরো বলেন, গাজীপুরে লক্ষ লক্ষ মানুষকে কষ্ট না দিয়ে আমি তাঁকে (হাসান উদ্দিন সরকারের) পরামর্শ দিয়েছি আপনি হসপিটালে ভর্তি হন। আপনি একা চলতে পারেন না। আপনি এখন চারজনের ওপর ভর করে চলেন। সিটি করপোরেশনের যারা আপনার ওপর ভর করে চলবে তাদের ভর আপনি কিভাবে বহন করবেন?

গণসংযোগে জাহাঙ্গীর আলম

আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম শনিবার সকালে নিজ বাসভবনে ওলামা লীগের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে বেলা ১১টায় খরতৈলে গণসংযোগ ও পথসভার মাধ্যমে দিনের কর্মসূচি শুরু করেন। সাতাইশ স্কুল এলাকায়, সাতাইশ চৌরাস্তা, ৫২ নম্বর মুদাফা, ৫৩ নম্বরে  দেওড়া ফকির মার্কেট, ৫৫ নম্বর মিলগেট এলাকায় পথসভায় ভোট প্রার্থনা করেন।

এ সময় বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি মো. আতিকুল ইসলামও পথসভায় বক্তব্য দেন ও গণসংযোগ করেন।  অন্যদের মধ্যে মো. তোফাজ্জল হোসেন, মো. জালাল উদ্দিন মাস্টার, কাজী ইলিয়াস আহমেদ, মোস্তফা হুমায়ুন হিমু, মো. সাইফুল ইসলাম, আবদুল কাইয়ুম, নীলিমা আক্তার লিলি, মো. নুরুল ইসলাম নুরু, মো. আলী মিয়া, মো. সোলেমান হায়দার, মো. সেলিম মিয়া, এম এম হেলাল উদ্দিন, মোস্তাফিজুর রহমান টিটু, আবদুল আলীম, মো. কামাল হোসেন, মাসুম বিল্লাহ বিপ্লব, কাজী মঞ্জুর, রেজাউল করিম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

মো. আতিকুল ইসলাম আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর পক্ষে শনিবার সকালে সাতাইশ স্কুলের সামনে, সাতাইশ চৌরাস্তা, ৫২ নম্বর ওয়ার্ডের মুদাফা, ৫৩ নম্বর ওয়ার্ডের দেওড়া ফকির মার্কেট, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডের মিলগেট এলাকায় পথসভায় ভোট প্রার্থনা করেন।

অপরদিকে বেলা ৩টায় নগরীর টঙ্গী নোয়াগাঁও এলাকায় গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য মো. জাহিদ আহসান রাসেলের বাসভবনে ঈদ পরবর্তী পারিবারিক দাওয়াতে যোগ দেন মেয়র প্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম। এ ছাড়া সেখানে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সংসদ সদস্য জাহিদ আহসান রাসেল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাওছার, সাবেক এমপি কাজী মোজাম্মেল হক, আতিকুল ইসলাম, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আজমত উল্লাহ খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব মো. ইকবাল হোসেন সবুজ, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কাজী ইলিয়াস আহমেদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। সেখানে তারা দাওয়াত পরবর্তী এক বৈঠক শেষে সিটি নির্বাচনের সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে গণমাধ্যম কর্মীদের ব্রিফিং দেন।

এ সময় জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আজকে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মের মাধ্যমে গাজীপুরে নৌকার গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আপনাদের মিডিয়ার মাধ্যমে আগামী ২৬ জুন নির্বাচনে নৌকা মার্কায় সবার দোয়া, সহযোগিতা ও ভোট চাই।

আজমত উল্লাহ খান বলেন, ‘নৌকার পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই আওয়ামী লীগের সব নেতৃবৃন্দ নৌকার পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। আমাদের প্রার্থী ৫৭ ওয়ার্ডে বার বার ভোটারের দ্বারে দ্বারে গিয়েছেন। আমাদের কর্মীরা কাজ অব্যাহত রেখেছেন। আগামী ২৬ জুন নির্বাচনে নৌকা মার্কায় জাহাঙ্গীর আলমের বিজয় সুনিশ্চিত করে আমরা ঘরে ফিরব। গাজীপুরবাসী জননেত্রী শেখ হাসিনাকে নৌকার বিজয় উপহার দিতে প্রস্তুত।’

শেষ হচ্ছে প্রচার-প্রচারণা 

এদিকে আজ রোববার দিবাগত রাত ১২টায় শেষ হচ্ছে সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা। প্রার্থীদের প্রচার প্রচারণাও শেষ পর্যায়ে। নির্বাচনে বড় দুই দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মাঝেই মূলত প্রতিদ্বন্দিতা হবে।  অপর দলের প্রার্থীরাও নির্বাচনের মাঠে তাদের গ্রহণযোগ্যতা যাচাই করে দেখতে চায়।

নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় গত ৩১ মার্চ। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী ১৫ মে এ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতাকে কেন্দ্র করে হাইকোর্ট গত ৬ মে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচন তিন মাসের জন্য স্থগিত করে আদেশ দেয়। এতে স্থগিত হয়ে যায় নির্বাচনী সব ধরনের কার্যক্রম। পরে হাইকোর্টের ওই আদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই মেয়র প্রার্থী এবং নির্বাচন কমিশন। শুনানি শেষে ওই স্থগিতাদেশ স্থগিত করে নির্বাচন অনুষ্ঠান করার আদেশ দেন উচ্চ আদালত। উচ্চ আদালতের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী ২৬ জুন মঙ্গলবার গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করে দ্বিতীয় দফায় ঘোষণা দেয় নির্বাচন কমিশন। নতুন ঘোষিত তারিখ অনুযায়ী প্রার্থীরা আজ ১৮ জুন থেকে এ নির্বাচনে আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা শুরু করেন প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকরা।

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থীসহ সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এদের মধ্যে ছয়জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মনোনীত এবং একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী রয়েছেন। এছাড়াও গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডের সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন এবং ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডের সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন প্রার্থী এ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে একটি ওয়ার্ডে সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে একজন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এবার গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৫ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ এবং নারী ভোটার ৫ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১।