শ্রীপুরে জঙ্গি আস্তানায় পুলিশের অভিযান, দম্পতি আটক
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের পার্শ্ববর্তী শ্রীপুরে এক জঙ্গি আস্তানায় আজ রোববার অভিযান চালিয়ে অস্ত্র ও বোমাসহ এক দম্পতিকে আটক করেছে পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট।
ধারণা করা হচ্ছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাশকতা করার জন্য তারা কিছুদিন ধরে সেখানে আস্তানা গেড়েছিল।
কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিট সূত্র ও কালিয়াকৈর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) শাহীদুল ইসলাম জানান, শ্রীপুরের পৌরসভার কেওয়া পশ্চিম খণ্ড (মাওনায়) এলাকায় পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত হাবিলদার রফিকুল ইসলামের দোতলা বাড়ির নিচতলার একটি ফ্ল্যাটে জেএমবির কয়েকজন সদস্য অবস্থান করছে- এমন গোপন তথ্যের ভিত্তিতে রোববার ভোররাতে সেখানে অভিযান চালায় কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের সদস্যরা। এ অভিযানে পুলিশ সদর দপ্তরের এলআইসি শাখা ও স্থানীয় পুলিশ অংশ নেয়। এ সময় ওই ফ্ল্যাটের ভাড়াটিয়া আবদুর রহমান (৩৭) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করা হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা আবদুর রহমানের ঘর থেকে তিনটি পিস্তল ও চারটি বোমা উদ্ধার করে। আটক আবদুর রহমানের বাড়ি পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার কালীগঞ্জ গ্রামে। এ সময় আবদুর রহমানের স্ত্রী শামসুন্নাহারকেও আটক করা হয়।
দুপুরে ঢাকা মহানগর পুলিশের বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের উপকমিশনার রহমতুল্লাহ চৌধুরী, কাউন্টার টেরোরিজেমের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এডিশনাল এসপি) আহসান হাবিব ও বোমা নিষ্ক্রিয়করণ ইউনিটের পরিদর্শক মুমিন খানের নেতৃত্বে একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। পরে তারা বোমাগুলো নিষ্ক্রিয় করে। এ সময় ওই বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয় এবং ঘটনার সময় যেকোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়াতে ঘরে পানি ছিটিয়ে দেয় মাওনা ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। বিকেল ওই অভিযান শেষ হয়।
বাড়ির মালিক রফিকুল ইসলাম জানান, নিজেকে ড্রাইভার হিসেবে পরিচয় দিয়ে আবদুর রহমান প্রায় দুই মাস আগে স্ত্রীসহ এসে সাড়ে তিন হাজার টাকায় ভাড়া নিয়ে ওই ফ্ল্যাটে বসবাস শুরু করেন। তবে আবদুর রহমান কোন জায়গার কী গাড়ি চালাতেন তা জানা যায়নি।
বাড়ির মালিকের ছোট ভাই বাচ্চু মিয়াসহ স্থানীয়রা জানান, প্রায় দুই মাস আগে স্ত্রীকে নিয়ে আবদুর রহমান ওই ফ্ল্যাটে ওঠেন। তারা আশপাশের লোকজনকে এড়িয়ে চলতেন। কারো সঙ্গে তেমন কথাবার্তা বলতেন না। নিঃসন্তান ওই দম্পতির দুই মাস বয়সী একটি পালিত কন্যা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে দুদিন আগে মারা যায়। ধারণা করা হচ্ছে, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাশকতা করার জন্য তারা সেখানে আস্তানা গেড়েছিল।