ভোটে অনিয়ম, ৯ কেন্দ্র স্থগিত

Looks like you've blocked notifications!
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিতে ভোটারদের সারি। ছবি : ফোকাস বাংলা

গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট চলাকালে জাল ভোট, ব্যালট পেপার ছিনতাইসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে নয়টি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টায় নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন এ তথ্য দেন। তাঁর দেওয়া লিখিত বার্তায় বলা হয়, ‘দুষ্কৃতিকারী কর্তৃক ব্যালট পেপার ছিনতাই এবং ব্যালট, বাক্সে জোরপূর্বক প্রবেশ করায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি হয়।’

স্থগিত হওয়া ভোটকেন্দ্রগুলো হলো- ৯৮ ভোগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১৬৬ মদিনাতুল উলুম সিনিয়র মাদ্রাসা, ২৪৩ কুনিয়া হাজি আ. লতিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৪৪ কুনিয়া হাজি আ. লতিফ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ২৭৪ বিন্দান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৩৪২ জাহান পাবলিক দত্তপাড়া, ৩৭২ খরতৈল মনসুর আলী আদর্শ বিদ্যালয়, ৩৭৩ খরতৈল মনসুর আলী আদর্শ বিদ্যালয় ও ৩৮১ হাজি পিয়ার আলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।     

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাগবাড়ী হাক্কানিয়া ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসা ২-এর ভোটকেন্দ্রের নারী বুথে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ আধা ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে পুনরায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এ সময় সেখানে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় ছয়জন আহত হন।

নির্বাচন কমিশনের (ইসি) নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মেজর রাজু (এনআইডি আইডিয়া প্রজেক্ট) দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

মেজর রাজু বলেন, ‘হাক্কানিয়া ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসা-২ বুথে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে ব্যালট পেপার ছিনতাই ও জাল ভোট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত ছয়জন আহত হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।’

আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত এ সিটি করপোরেশনের ভোটগ্রহণ করা হয়। নির্বাচনে ৪২৫টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। মোট সাত মেয়র প্রার্থীর পাশাপাশি ২৫৪ জন সাধারণ কাউন্সিলর ও ৮৪ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর প্রার্থী এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

আরো প্রার্থী থাকলেও গাজীপুর সিটির মেয়র পদে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) মনোনীত জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির (ধানের শীষ) মনোনীত হাসান উদ্দিন সরকার। 

নির্বাচনে চাপুলিয়া মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ভোটার-২৪৮০), চাপুলিয়া মফিজউদ্দিন খান উচ্চ বিদ্যালয় (ভোটার-২৫৫২), পশ্চিম জয়দেবপুরের মারিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-১ (ভোটার-২৫৬২), মারিয়ালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্র-২ (ভোটার-২৮২৭), রানী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্র-১ (ভোটার-১৯২৭) ও রানী বিলাসমনি সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্র-২ (ভোটার-২০৭৭) এ ছয়টি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করা হয়।

এর আগে ২০১৩ সালে এ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে মেয়র পদে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান নির্বাচিত হন। অধ্যাপক মান্নান মেয়র পদে নির্বাচিত হলেও সরকারের রোষানলে পড়ে গত পাঁচ বছরের অধিকাংশ সময় তিনি কারাগারে বন্দি ছিলেন।