ভোট বন্ধের দাবি, না করলে শেষ পর্যন্ত লড়বেন হাসান

Looks like you've blocked notifications!
আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিএনপির জেলা কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ধানের শীষের মেয়র পদপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার। ছবি : এনটিভি

শতাধিক কেন্দ্রে জাল ভোট, কেন্দ্র থেকে দলীয় এজেন্টদের বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির মেয়র পদপ্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার।

তবে নির্বাচন কমিশন যদি ভোট বন্ধ না করে, তাহলে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকার অঙ্গীকারও করেছেন ধানের শীষের এই প্রার্থী।

হাসান উদ্দিন সরকার বলেন, ‘শতাধিক কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। আমি নির্বাচন বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। রিটার্নিং কর্মকর্তাকে আমি লিখিত দেবো নির্বাচন বন্ধ করার জন্য।’

তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকার অঙ্গীকার করে বিএনপি প্রার্থী বলেন, ‘আমি যদি না থাকি, তবে সরকারের মূল চরিত্রটা আপনারা উপলব্ধি করতে পারবেন না।’  

‘নির্বাচন বন্ধ করে দিলে আমি থাকব না। বন্ধ না করলে তো আমি আছি,’ এক প্রশ্নের জবাবে যোগ করেন হাসান উদ্দিন সরকার।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে এ সিটি করপোরেশনের ভোট শুরু হয়। ভোট চলবে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত। আরো প্রার্থী থাকলেও গাজীপুর সিটির মেয়র পদে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেন আওয়ামী লীগের (নৌকা) মনোনীত জাহাঙ্গীর আলম ও বিএনপির (ধানের শীষ) মনোনীত হাসান উদ্দিন সরকার। সকালে নগরীর বশিরউদ্দিন উদয়ন একাডেমি স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন বিএনপির প্রার্থী। অন্যদিকে আওয়ামী লীগের মেয়র পদপ্রার্থী জাহাঙ্গীর আলম নগরীর কানাইয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দিয়েছেন।

ভোট দিয়ে বিএনপি মেয়র প্রার্থী হাসান উদ্দিন সরকার এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, সুষ্ঠু ভোট হবে না। এরই মথ্যে ১০ থেকে ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সকালবেলা। এজেন্টদের পুলিশ মাইরা মাইরা বের করে দিচ্ছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমি শুধু বলব, আমি নির্বাচনে আছি, থাকব। সর্বশেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আমি ফলাফল দেখে মন্তব্য করব।'

দুপুর ২টার পর নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল জানান, ভোটে নানা ধরনের অনিয়মের অভিযোগে চারটি কেন্দ্রের ভোট স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুরের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের বাগবাড়ী হাক্কানিয়া ছালেহিয়া আলিম মাদ্রাসা-২-এর ভোটকেন্দ্রের নারী বুথে দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় ওই কেন্দ্রের ভোট গ্রহণ আধা ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। পরে পরিস্থিতি শান্ত হলে পুনরায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। এ সময় সেখানে ব্যালট পেপার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের ঘটনায় ছয়জন আহত হন।

এসব ঘটনার মধ্যেই দুপুরে বিএনপির জেলা কার্যালয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসেন হাসান উদ্দিন সরকার।

এ সময় বিএনপির প্রার্থী বলেন, ‘সকাল ৮টা, সাড়ে ৮টায় নিজ কেন্দ্রে ভোট দিয়ে, কোনাবাড়ী কাশিমপুরে আংশিক, গাছা, আংশিক টঙ্গী ঘুরে আমাদের হেডকোয়ার্টার, জেলা বিএনপির কার্যালয়ে উপস্থিত হয়েছি কিছু তথ্য আপনাদের দেওয়ার জন্য। আমার যতটুকু মনে হচ্ছে, এরই মধ্যে শতাধিক কেন্দ্রের আমাদের নির্বাচনের, পরিচালনার সাথে, দায়িত্বের সাথে যারা সম্পৃক্ত ছিল, তাদের গ্রেপ্তার, পুলিশি হয়রানি এবং পুলিশ এজেন্টদের, নির্বাচনের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া এবং বিভিন্ন কেন্দ্রের যাওয়ার পথগুলোতে তারা ওত পেতে বসে থাকত, সাদা পোশাকে।’

‘আমাদের দায়িত্বশীল লোকদের গ্রেপ্তার করেছে সেখান থেকে। আমি নির্বাচনে আপনাদের ঘোষণা দিয়েছিলাম, যে নির্বাচনের সর্বশেষ পর্যন্ত আমি থাকব। এবং ইনশাআল্লাহ নির্বাচনের সর্বশেষ পর্যন্ত থাকব।’

হাসান উদ্দিন সরকার আরো বলেন, ‘আমাদের কর্মীরা শত বাধাবিপত্তি অতিক্রম করেও তারা ধৈর্যের সঙ্গে, বিভিন্ন কেন্দ্রে, বিভিন্ন কায়দা কৌশল করে সেখানে থাকবার চেষ্টা করেছে। কিন্তু যেখানে, সরকারের, আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে যারা নিয়োজিত, তারা কখনো পোশাক পরে, কখনো সাদা পোশাক পরে তাদের হয়রানি করছে।’

এর আগে ২০১৩ সালে এ সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ওই নির্বাচনে মেয়র পদে বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী অধ্যাপক এম এ মান্নান নির্বাচিত হন। অধ্যাপক মান্নান মেয়র পদে নির্বাচিত হলেও সরকারের রোষানলে পড়ে গত পাঁচ বছরের অধিকাংশ সময় তিনি কারাগারে বন্দি ছিলেন। দ্বিতীয়বারের মতো এ সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে মোট ৪২৫টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।