‘নাগরিকদের কাছে আমাকে সমর্পণ করেছি’

Looks like you've blocked notifications!
মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। ছবি : এনটিভি

রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন বলেছেন, ‘নাগরিকদের কাছে আমাকে সমর্পণ করেছি। নাগরিকরা যদি আমাকে সেবা করার সুযোগ দেন, আমি রাজশাহীবাসীর জন্য কাজ করে তাদের ঋণ শোধ করব।’

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া শেষে রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এসব কথা বলেন খায়রুজ্জামান লিটন।

খায়রুজ্জামান বলেন, ‘আমরা নির্বাচনের যাবতীয় প্রস্তুতি গ্রহণ করেছি।’ তিনি বলেন, ‘রাজশাহীতে যে কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন আমি কিছুটা হলেও দিতে পেরেছিলাম ২০০৮ থেকে ২০১৩ সালে পরবর্তী পাঁচ বছর সে উন্নয়ন একেবারে নস্যাৎ হয়ে গেছে। যা করে রেখেছিলাম তাও ধরে রাখা যায়নি। যাঁরা ছিলেন তাঁরা করতে পারেননি।’

এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন জানান, তিনি ফাঁকা মাঠে গোল দিতে চান না। বিএনপিসহ অন্য মেয়র প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তিনি মেয়র পদে জিততে চান।

খায়রুজ্জামান বলেন, ‘অন্যান্য সিটি করপোরেশনে যেভাবে উন্নয়নের কথা চিন্তা করে ভোটাররা মেয়র নির্বাচিত করেছেন, রাজশাহীতেও তার ব্যতিক্রম হবে না।’ তিনি জানান, মেয়র থাকাকালে রাজশাহীতে উন্নয়নের যে ধারা তিনি সূচনা করেছিলেন, এবার নির্বাচিত হলে সেই ধারা অব্যাহত রাখবেন।

রাজশাহীর সাবেক মেয়র আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ। আগের ভুলত্রুটি শুধরে তাঁরা নৌকার পক্ষে ভোট চাইতে নগরীর প্রতিটি বাড়ি বাড়ি যাচ্ছেন। তাঁরা আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের বার্তা ভোটারদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে দিচ্ছেন। নগরবাসী তা বুঝতেও পারছে। এবার রাজশাহীর মানুষ আর ভুল করবে না।’

এ সময় উপস্থতি ছিলেন ভাষাসৈনিক আবুল হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক রুহুল আমিন প্রামাণিক, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোহা. আসাদুজ্জামান আসাদ, মহানগর আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি শাহীন আকতার রেনী, সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মীর ইকবাল, নওশের আলী, মাহফুজুর রহমান লোটন, সাধারণ সম্পাদক মো. ডাবলু সরকার, মহানগর ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ প্রামাণিক দেবু, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. জেডু সরকার। এ সময় আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী রাজশাহী আঞ্চলিক নির্বাচন অফিস চত্বরে উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে ঝিরিঝিরি বৃষ্টির মধ্যে দলীয় নেতাদের সঙ্গে নিয়ে লিটন নগরীর কাদিরগঞ্জে তাঁর বাবা বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট সহচর শহীদ জাতীয় চার নেতার অন্যতম এ এইচ এম কামারুজামান হেনার কবর জিয়ারত করেন। সেখান থেকে তিনি দরদাপাড়ায় হযরত শাহ মখদুম রুপোষ (রহ.) মাজার জিয়ারত করে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান।

১৯৯১ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত একটানা ১৬ বছর রাসিকের মেয়র ছিলেন বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিনু। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তিনি কারাগারে থাকায় নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। তাই দলীয় সমর্থন পেয়ে সেবারই প্রথমবারের মতো মেয়র পদে লড়াইয়ের সুযোগ পান সেই সময়ের মহানগর যুবদলের সভাপতি মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল। তবে ওই নির্বাচনে তিনি মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটনের কাছে পরাজিত হন। পাঁচ বছর পর ২০১৩ সালের নির্বাচনে লিটনকে পরাজিত করে মেয়র হন বুলবুল।

কিন্তু দায়িত্ব গ্রহণের পর ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় বুলবুল মেয়র পদ থেকে বরখাস্ত হন একাধিকবার। দুই দফায় জেল খাটেন প্রায় ছয় মাস। পাঁচ বছরের মধ্যে সব মিলিয়ে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন মাত্র ২৬ মাস। আগামী ৩০ জুলাইয়ের রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে অংশ নিতে গতকাল বুধবার তিনি মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

রাজশাহী সিটিতে এবার মোট ভোটার তিন লাখ ১৮ হাজার ১৩৮ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার এক লাখ ৫৬ হাজার ৮৫ জন ও নারী ভোটার এক লাখ ৬২ হাজার ৫৩ জন। ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৭টি।