গাজীপুর সিটিতে জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে যাঁদের

Looks like you've blocked notifications!

গাজীপুর সিটি করপোরেশনের অনুষ্ঠিত নির্বাচনে নির্ধারিত সংখ্যক ভোট না পাওয়ায় সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদের (স্থগিত হওয়া কেন্দ্র বাদে) ১১৬ জন প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে। ওই ১১৬ প্রার্থীর জামানতের মোট টাকার পরিমাণ ১৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা।

গতকাল শুক্রবার দুপুরে নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং ঢাকা বিভাগীয় আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা রকিব উদ্দিন মণ্ডল এসব জানান।

এদের মধ্যে সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে ৮৮ জন এবং সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর পদে ২৮ জন রয়েছেন। এবারের নির্বাচনে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৫৪ জন ও সংরক্ষিত (নারী) কাউন্সিলর পদে ৮৪ জন প্রার্থী অংশ নিয়েছিলেন। এ ছাড়া মেয়র পদে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি মনোনীত প্রার্থী ছাড়া অবশিষ্ট পাঁচ প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।

রকিব উদ্দিন মণ্ডল জানান, বিধি অনুযায়ী নির্বাচনে কোনো প্রার্থী যদি মোট প্রদত্ত ভোটের আট ভাগের এক ভাগের চেয়ে কম ভোট পান তবে তাঁদের জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হবে। এ ক্ষেত্রে সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদের প্রার্থীরা যে ওয়ার্ড থেকে অংশ নেবেন, সে ওয়ার্ডে ভোটার সংখ্যা এক থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত থাকলে তাঁদের জামানত ১০ হাজার টাকা, ১৫ হাজার থেকে  ৩০ হাজার পর্যন্ত থাকলে তাঁদের বেলায় জামানত ২০ হাজার টাকা এবং ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার সংখ্যক ভোট থাকলে জামানত ৩০ হাজার টাকা নির্ধারিত আছে। তবে সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের ভোটার সংখ্যা যাই হোক তাঁদের বেলায় জামানত হলো স্থায়ী ১০ হাজার টাকা।

পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন (প্রতিজনের ২০ হাজার টাকা জামানত), ২ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচজন, (প্রতিজনের ২০ হাজার টাকা), ৪ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা) ৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা) ৭ নম্বর ওয়ার্ডে চারজন (প্রতিজনের ১০ হাজার টাকা) ৯ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন (প্রতিজনে ২০ হাজার টাকা), ১০ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা), ১১ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (১০ হাজার টাকা), ১২ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন (প্রতিজনে ২০ হাজার টাকা), ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা), ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন (প্রতিজনের ২০ হাজার টাকা), ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা), ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন (প্রতিজনে ২০ হাজার টাকা), ২১ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন (প্রতিজনে ২০ হাজার টাকা), ২২ নম্বর ওয়ার্ডে চারজন (প্রতিজনে ২০ হাজার টাকা), ২৩ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন (প্রতিজন ২০ হাজার টাকা), ২৪ নম্বর ওয়ার্ডে সাতজন (প্রতিজনে ২০ হাজার টাকা করে), ২৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (১০ হাজার টাকা), ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা), ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে পাঁচজন (প্রতিজনে ২০ হাজার টাকা), ২৮ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা), ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা), ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন (প্রতিজনে ১০ হাজার টাকা), ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন (প্রতিজনে ১০ হাজার টাকা), ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (১০ হাজার টাকা), ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডে চারজন (প্রতিজনে ১০ হাজার টাকা), ৩৪ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা জামানত), ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন (৩০ হাজার টাকা জামানত), ৩৮ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন (প্রতিজনে ২০ হাজার), ৩৯ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (১০ হাজার টাকা), ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (১০ হাজার টাকা), ৪১ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা), ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (২০ হাজার টাকা), ৪৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (৩০ হাজার টাকা), ৪৭ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন (প্রতিজনে ৩০ হাজার টাকা), ৪৯ নম্বর ওয়ার্ডে সাতজন (প্রতিজনে ২০ হাজার টাকা), ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডে একজন (৩০ হাজার টাকা জামানত), ৫৫ নম্বর ওয়ার্ডে  তিনজন (প্রতিজনে ১০ হাজার টাকা), ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন (প্রতিজনে ২০ হাজার টাকা) সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী নির্বাচনে নির্ধারিত সংখ্যক ভোট পেতে ব্যর্থ হয়েছেন। তাই নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী তাঁদের জামানত বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।

এ ছাড়া একই কারণে সংরক্ষিত আসনের (নারী) ১ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন, ২ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডে চারজন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে চারজন, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে চারজন, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে একজন, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে একজন, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে একজন, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে তিনজন, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে একজন এবং ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে  দুজনের ১০ হাজার টাকা করে জামানতের টাকা বাজেয়াপ্ত হচ্ছে।

এদিকে, ব্যালট পেপার ছিনতাই ও জোর করে তাতে সিল মেরে ব্যালটে ঢোকানোর অভিযোগে নির্বাচন কমিশন আটটি ওয়ার্ডের নয়টি কেন্দ্র স্থগিত করে। তার মধ্যে পাঁচটি ওয়ার্ডের (ওয়ার্ড নম্বর ৩৭, ৪২, ৪৮, ৫১ ও ৫৩) পাঁচটি কেন্দ্রের প্রতিটিতে (কেন্দ্র নম্বর ২৪৩, ২৭৪, ৩৪২, ৩৭২ ও ৩৮১) স্থগিত ভোটার সংখ্যা নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোটের পার্থক্যের চেয়ে অনেক বেশি। তাই ওই পাঁচটি কেন্দ্রে পুনরায় ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। একই কারণে ৯ নম্বর সংরক্ষিত ওয়ার্ডের (কেন্দ্র নম্বর ১৬৬) কাউন্সিলর পদে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান।

গাজীপুর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. তারিফুজ্জামান জানান,  নির্বাচন কমিশনের পুনঃঘোষিত তারিখ অনুযায়ী গত ২৬ জুন দেশের বৃহত্তম গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৫৭টি সাধারণ ও ১৯টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে এবার মোট ভোটার সংখ্যা ১১ লাখ ৩৭ হাজার ৭৩৬ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার পাঁচ লাখ ৬৯ হাজার ৯৩৫ জন এবং নারী ভোটার পাঁচ লাখ ৬৭ হাজার ৮০১ জন। এবারের নির্বাচনে একটি ওয়ার্ডে সাধারণ আসনের কাউন্সিলর পদে একজন প্রার্থী বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।