স্টুডিওতে গোপনে নারীদের ছবি তুলে ধর্ষণ করতেন তিনি!
শরীয়তপুরের গোসাইরহাট উপজেলার হাঁটুরিয়া বাজারে ফাঁদে ফেলে একাধিক নারীকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগ এক স্টুডিওর মালিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়া স্টুডিওর মালিকের নাম রাজিব দাস। তাঁর বাড়ি গোসাইরহাট উপজেলার ঘাটাখান গ্রামে।
দুই সন্তানের জনক রাজিব দাসের স্টুডিওতে এলাকার নারীরা ছবি তুলতে গেলে তিনি প্রতারণার ফাঁদে ফেলে একাধিক নারীকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানি করেছে বলে অভিযোগ ওঠেছে।
গোসাইরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ বি এম মেহেদী মাসুদ বলেন, মেয়েরা রাজিব দাসের স্টুডিওতে ছবি তুলতে যেত। অনেক সময় একাধিক ছবি তোলার জন্য স্টুডিওতেই পোশাক পরিবর্তন করে নিতেন তাঁরা। এ সময় রাজিব দাস গোপন ক্যামেরায় তাঁদের ছবি তুলতেন। পরে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অনেক নারীকে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণ করেছেন। এলাকায় খোঁজখবর নিয়ে প্রাথমিকভাবে বিষয়টির সত্যতা পেয়েছি। এরপর গতকাল রোববার এক ভুক্তভোগী নারী বাদী হয়ে গোসাইরহাট থানায় একটি ধর্ষণ ও পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করেন।
এরপর আজ সকালে ওই স্টুডিও থেকে রাজিব দাসকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে পুলিশ। রাজিব দাস ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্র জানা গেছে, গোসাইরহাট উপজেলার ঘাটাখান গ্রামের রাজিব দাস একই উপজেলার শরীয়তপুর-বরিশালের সীমান্তবর্তী এলাকা হাঁটুরিয়া বাজারে পূর্ণিমা ডিজিটাল স্টুডিও এবং বিকাশ এজেন্ট হিসেবে দোকান খুলে ব্যবসা করে আসছেন। এক নারী ওই স্টুডিওতে ছবি তুলতে ও বিকাশ থেকে টাকা উত্তোলন করতে যান। এ সময় কৌশলে ওই নারীর মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে রেখে দেন রাজিব দাস। এরপর মাঝে মধ্যে ওই নারীকে ফোন দিয়ে প্রেম নিবেদন করেন রাজিব দাস। এতে সাড়া না পেয়ে কিছুদিন পরে রাজিব দাস ফোন করে ওই নারীকে হুমকি দেন।
রাজিব বলেন, ‘তোমার কিছু আপত্তিকর ছবি আমার কাছে আছে। তুমি আমার ডাকে সাড়া না দিলে ছবিগুলো তোমার শ্বশুর বাড়ির লোকজনকে দেখাব এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে দেব।’ এরপর লোকলজ্জার ভয়ে ওই নারী রাজিব দাসের ফোনে সাড়া দিয়ে স্টুডিওতে যান। এ সময় রাজিব দাস স্টুডিওর পেছনে ছোট একটি কক্ষে নিয়ে ওই নারীর মুখমণ্ডল অন্য একটি নগ্ন ছবিতে বসানো সম্পাদিত ছবি তাঁকে দেখান। এতে হতবাক ও দিশেহারা হয়ে যান ওই নারী। এ সময় তাঁকে ধর্ষণ করেন রাজিব দাস।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, এর আগেও একাধিক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে রাজিব দাসকে স্থানীয় সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিচার ও জরিমানা করা হয়েছে। ওই স্টুডিওতে নারীরা ছবি তুলতে গেলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে তাঁদের যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের চেষ্টা করেন রাজিব দাস।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোসাইরহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুবেল হোসেন বলেন, আসামি রাজিব দাসের বিরুদ্ধে একাধিক নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে তদন্তের জন্য আমরা তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড চেয়েছি।