বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় দুর্ভোগে রোহিঙ্গারা

Looks like you've blocked notifications!

চলতি বর্ষায় বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ায় দুর্ভোগে রয়েছে কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফে আশ্রিত রোহিঙ্গারা। গত এক মাসে বৃষ্টিতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে অর্ধশতাধিক ছোট-বড় পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। এতে এক শিশুর মৃত্যু ও ৩৩ জন আহত হয়েছে।

বন্যা ও পাহাড়ধসের আতঙ্কে রয়েছে পাহাড় ও পাহাড়ের পাদদেশে বসবাসরত হাজার হাজার রোহিঙ্গা। অতি ঝুঁকিতে থাকা রোহিঙ্গাদের সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে ৩০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বর্ষায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আরো ভয়াবহ পাহাড়ধস ও বন্যায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে।

গত বছরের ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সেনাবাহিনীর হত্যা, ধর্ষণ, সহিংসতা ও নিপীড়ন থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখ রোহিঙ্গা। এর আগে বিভিন্ন সময়ে আসাসহ উখিয়া-টেকনাফের ৩০টি ক্যাম্পে বর্তমানে ১১ লাখের অধিক রোহিঙ্গার অবস্থান। সাড়ে পাঁচ হাজার একর বনভূমিতে পাহাড় কেটে ও পাহাড়ের পাদদেশে ঝুপড়ি ঘর বেঁধে এসব রোহিঙ্গা আশ্রয় নিয়েছে। এর মধ্যে চলতি বর্ষায় বন্যা ও পাহাড়ধসের অতি ঝুঁকিতে থাকায় এক লাখ রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। পাহাড় কেটে নিরাপদ বসতি উপযোগী করে ৩০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

এদিকে, গত এক মাসে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে বৃষ্টি, ঝড়ো হাওয়া, অর্ধশতাধিক ছোট-বড় পাহাড়ধস ও ঢলের পানিতে প্রায় চার হাজার ঝুপড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বেশ কয়েকটি অফিসও বিধ্বস্ত হয়েছে। পাহাড়ধসে এক শিশুর মৃত্যু ও ৩৩ জন আহত হয়েছে। এতে বন্যা ও পাহাড়ধসের আতঙ্কে রয়েছে হাজার হাজার রোহিঙ্গা।

বাংলাদেশ সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মো. আবুল কালাম জানান, চলতি বর্ষায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে বন্যা এবং বেশ কিছু পাহাড়ধসের ঘটনায় ক্ষয়ক্ষতির হয়েছে।

কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নিকারুজ্জামান জানান, এরই মধ্যে অতি ঝুঁকিপূর্ণ ৩০ হাজারের অধিক রোহিঙ্গাকে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। বাকিদের পর্যায়ক্রমে সরিয়ে নেওয়ার কাজ চলমান রয়েছে। কম ঝুঁকিপূর্ণ রোহিঙ্গাদের ঘর শক্তভাবে মেরামত করা হয়েছে বলে জানালেন এ কর্মকর্তা।

রোহিঙ্গারা পাহাড় কেটে বসতি গড়ার পাশাপাশি জ্বালানি কাঠের জন্য পার্শ্ববর্তী সংরক্ষিত বন কেটে উজাড় করেছে। এতে পাহাড়ের উপরিভাগের শক্তি কমে যাওয়ায় ব্যাপক হারে পাহাড় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।

স্থানীয় প্রশাসন বলছে, ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারগুলোর নিরাপত্তার জন্য স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসাসহ সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত রাখা হয়েছে।