বান্ধবীর বাসায় ডেকে আরেক বন্ধুকে সাত টুকরো করেন পিন্টু

Looks like you've blocked notifications!

নারায়ণগঞ্জের নিতাইগঞ্জ থেকে ২১ মাস ধরে নিখোঁজ কাপড় ব্যবসায়ী স্বপন কুমার সাহাকেও স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষের মতো একই কায়দায় হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। এ-সংক্রান্ত মামলার দুই আসামি ১৬৪ ধারায় আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ কথা জানিয়েছেন।

প্রবীর হত্যা মামলার প্রধান আসামি পিন্টু দেবনাথের বান্ধবী রত্না চক্রবর্তী ও হত্যাকাণ্ডের প্ররোচনাকারী আবদুল্লাহ আল মামুন স্বপন হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে এ জবানবন্দি দেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে দীর্ঘ চার ঘণ্টা নারায়ণগঞ্জ জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আশেক ইমামের আদালতে রত্না চক্রবর্তী এবং মেহেদী মহসিনের আদালতে আবদুল্লাহ আল মামুনের দেওয়া জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।

জবানবন্দিতে রত্না চক্রবর্তী আদালতকে জানান, পিন্টু দেবনাথের টাকায় কলকাতায় কেনা একটি ফ্ল্যাট স্বপন কুমার বুঝিয়ে না দেওয়ায় এবং রত্নার সঙ্গে স্বপনের অবৈধ সম্পর্কের জের ধরেই এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। জবানবন্দি শেষে আদালতের নির্দেশে তাঁদের দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়।

নারায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত পুলিশ সুাপার (প্রশাসন) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, প্রবীর চন্দ্র হত্যা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে বেরিয়ে আসে, পিন্টু দেবনাথ ২১ মাস আগে তাঁর আরেক বন্ধু স্বপন কুমার সাহাকে হত্যা করে লাশ শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেন। ২০১৬ সালের ২৭ অক্টোবর বিকেলে পূর্বপরিকল্পিতভাবে পিন্টু দেবনাথের বান্ধবী রত্না চক্রবর্তী শারীরিক সম্পর্কের কথা বলে মোবাইল ফোনে স্বপন সাহাকে মাসদাইরের বাসায় ডেকে নিয়ে যান। স্বপন ওই বাসায় গেলে পিন্টু দেবনাথকে মোবাইল ফোনে জানান রত্না। পিন্টু দেবনাথ এসে জুসের সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে কৌশলে স্বপনকে খাইয়ে দেন। এতে স্বপন অচেতন হয়ে পড়েন। পিন্টু দেবনাথ তাঁর মাথায় আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে স্বপনের লাশ বাথরুমে নিয়ে সাত টুকরা করে বাজারের ব্যাগে ভরে শীতলক্ষ্যা নদীতে ফেলে দেন।

পুলিশ কর্মকর্তা আরো জানান, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আরো কেউ জড়িত আছে কি না তা তদন্ত করা হচ্ছে।

এর আগে গত ১৪ জুলাই নারায়ণগঞ্জ শহরের কালীরবাজার এলাকার স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষকে সাত টুকরো করে হত্যার দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন পিন্টু দেবনাথ।

পিন্টু আদালতকে জানান, অর্থ, বন্ধকী স্বর্ণালংকার ও দোকান আত্মসাতের পরিকল্পনায় এবং ব্যক্তিগত নানা ক্ষোভের কারণে তিনি নিজেই তাঁর বন্ধু প্রবীরকে হত্যা করেন। এ সময় বিচারকের কাছে খুনের পরিকল্পনা থেকে শুরু করে খুন-পরবর্তী লাশ সাত টুকরো করা এবং তা গুম করে ফেলার বিস্তারিত বর্ণনা তুলে ধরেন পিন্টু।

গত ১৮ জুন রাত সাড়ে ৯টায় নিখোঁজ হন প্রবীর চন্দ্র ঘোষ। এর ২১ দিন পর ৯ জুলাই রাত ১১টায় শহরের আমলপাড়া এলাকার রাশেদুল ইসলাম ঠান্ডু মিয়ার চারতলা ভবনের নিচে সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে তাঁর খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করে জেলা ডিবি পুলিশ।