‘ঘুষসহ’ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, এখন নিয়মিত অফিস করেন

Looks like you've blocked notifications!
পাবনার আটঘরিয়া উপজেলায় গত ১০ জুলাই আটকের পর সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহান। ছবি : এনটিভি

পাবনার আটঘরিয়া উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহানের খুটির জোর কোথায়? এ প্রশ্ন এখন আটঘরিয়াসহ গোটা জেলার মানুষের।

গত ১০ জুলাই ঘুষ নেওয়ার সময় ৬২ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে তাঁকে গ্রেপ্তার করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। একই সময় মোহরার আশরাফুল আলমকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়। পরে এ ব্যাপারে ওই দিনই দুদকের সহকারী পরিচালক গোলাম মওলা বাদী হয়ে ইশরাত ও আশরাফুলকে আসামি করে আটঘরিয়া থানায় মামলা দায়ের করেন।

পরে ওই দুজনকে আদালতে হাজির করা হলে পাবনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আবদুল বাছেত মো. বুলু সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহানের জামিন মঞ্জুর করেন। আর মোহরার আশরাফের জামিন না মঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এ ঘটনার পর থেকেই সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহান আটঘরিয়ায় নিয়মিত অফিস করছেন। বিষয়টি নিয়ে নানা মহলে প্রশ্ন ও আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ইশরাত জাহানের বাড়ি পাবনার সুজানগর উপজেলার খলিলপুর আমিরাবাদ বড়ুরিয়া গ্রামে। তাঁর স্বামীর নাম নূরে আলম বাপ্পী। তাঁর বাড়ি শেরপুর জেলার নকলা উপজেলার কোটেরচর গ্রামে।

দুদকের দাবি, দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার দিন থেকেই অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা চাকরিতে সাময়িক বরখাস্ত হবেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আইনের যথাযথ প্রয়োগ হয়নি।   

দুদকের সরকারি কৌঁসুলি  (পিপি) অ্যাডভোকেট খন্দকার জাহিদ রানা বলেন, ‘দুদকের মামলা জামিন অযোগ্য। তার পরও বিচারক জামিন দিতে পারেন।’ তিনি আরো বলেন, ‘দুদকের মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার দিন থেকেই অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা চাকরিতে সাময়িক বরখাস্ত হবে- এটাই নিয়ম।’

পাবনা জেলা রেজিস্ট্রার মণীন্দ্র নাথ বর্মণ বলেন, ‘আটঘরিয়ার সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহানকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি জানিয়ে ওই দিনই (১০ জুলাই) সন্ধ্যায় নিবন্ধন পরিদপ্তরের মহাপরিদর্শক (আইজিআর) অফিসে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। এরপর বিষয়টি নিয়ে ঊর্ধ্বতন মহল সিদ্ধান্ত নেবে।’

আটঘরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আকরাম আলী দুদকের মামলার কথা স্বীকার করে বলেন, ‘১০ জুলাই থেকে সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহান নিয়মিত অফিস করছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আজ বুধবার ৩৫টি জমির রেজিস্ট্রি বা সাফ কবলা সম্পাদন করেন ইশরাত জাহান।

এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন দুদক সমন্বিত কার্যালয় পাবনার উপপরিচালক আবু বকর সিদ্দিক। তিনি বলেন, ‘সাময়িক বরখাস্তের বিষয়টি আইনেই রয়েছে। এই মামলা নিয়ে দুই মাস ধরে অনুসন্ধান করেছি। আর ফলাফল শূন্য।’

উপপরিচালক বলেন, ‘এভাবে চললে মানুষ নিরুৎসাহিত হবে। জামিন আদেশের বিরুদ্ধে আমরা পাবনা জজ কোর্টে আপিল করব।’

এ ব্যাপারে আটঘরিয়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

গত ১০ জুলাই সন্ধ্যা ৬টার দিকে নিজ কার্যালয় থেকে ঘুষ হিসেবে নেওয়া  ৬২ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে আটঘরিয়া উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার ইশরাত জাহান ও মোহরার আশরাফুল আলমকে গ্রেপ্তার করে দুদক।