সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল পুনর্বহালের দাবি
সদ্য ঘোষিত বেতনস্কেলে সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল পুনর্বহাল করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) সমন্বয় কমিটি।
গতকাল বুধবার অনুষ্ঠিত বিসিএস সমন্বয় কমিটির সভায় এ দাবির কথা বলেন কমিটির নেতারা। কমিটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি প্রকৌশলী কবির আহমেদ ভূঁইয়া সভায় সভাপতিত্ব করেন।
কমিটির পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য নতুন বেতনস্কেল ঘোষণা করায় বিসিএস সমন্বয় কমিটি সরকারকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে। তবে এই বেতনস্কেলের মাধ্যমে সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বন্ধ করায় একই ব্যাচ ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের মধ্যে বেতন বৈষম্য বাড়বে এবং ক্ষেত্রবিশেষে পদ অবনমন হবে।
সংগঠনের মহাসচিব মো. ফিরোজ খানের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সভায় আলোচনা হয় যে, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের নিজস্ব ক্যাডার তফসিলের নির্ধারিত পদের (লাইনপদে) বাইরে উপসচিব বা তদূর্ধ্ব পর্যায়ের পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। এ স্তরে অনুমোদিত পদের চেয়ে অতিরিক্ত সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতির মাধ্যমে তাদের উচ্চতর স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আবার পদ না থাকার অজুহাতে অন্যান্য ক্যাডার ও ফাংশনাল সার্ভিসের কর্মকর্তাদের বছরের পর বছর এমন কি একযুগেরও অধিক সময় একই পদে বসিয়ে রাখা হয়। ফলে একই ব্যাচের কর্মকর্তাদের মধ্যে ব্যাপকভাবে বেতন বৈষম্য সৃষ্টি হয়। সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেলের কারণে সৃষ্ট এ বেতন বৈষম্য নিরসন করার সুযোগ থাকে। বেতনস্কেলে মূল বেতনের ওপর একটি নির্দিষ্ট হারে প্রতিবছর বেতন বৃদ্ধির সুবিধা দেওয়া হয়েছে। যে কর্মকর্তা নিয়মিতভাবে পদোন্নতি পাবেন, তিনিও এ সুবিধা পাবেন। নিয়মিত পদোন্নতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা প্রতিটি পদোন্নতিতে উচ্চতর বেতনস্কেলে যাবেন এবং ওই ধাপের মূল বেতনের নির্ধারিত হারে বেতন বৃদ্ধির সুবিধা পাবেন। অপরদিকে যে কর্মকর্তার পদোন্নতির সুযোগ নেই তিনি ওই কর্মকর্তার তুলনায় নিচের স্তরের বেতনস্কেলের নির্ধারিত হারে বেতন বৃদ্ধির সুবিধা পাবেন। তাই সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল বাতিল করা একটি চরম বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত।’
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘সিলেকশন গ্রেড বন্ধ করায় বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে পদ অবনমন হবে। শিক্ষা ক্যাডারে অধ্যাপকরা চতুর্থ গ্রেডে বেতন পান। এরমধ্যে থেকে ৫০ভাগ অধ্যাপক সিলেকশন গ্রেড হিসেবে তৃতীয় গ্রেডে উন্নীত হন। সিলেকশন গ্রেড বন্ধ করায় চতুর্থ গ্রেড থেকেই তাদের অবসরে যেতে হবে। এর প্রতিবাদে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন যে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, বিসিএস সমন্বয় কমিটি তার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছে।’
এ ছাড়া উপজেলা পর্যায়ের ১৭টি সার্ভিসের সেলফ ড্রয়িং কর্মকর্তার বেতনভাতা বিলে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) স্বাক্ষর করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে বিসিএস সমন্বয় কমিটি তীব্র প্রতিবাদ এবং এ সিদ্ধান্ত বাতিলের জোর দাবি জানিয়েছে। দাবি পূরণ না হলে বিসিএস সমন্বয় কমিটি আন্দোলনের হুমকি দিয়েছে।
আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বেতনস্কেলের বৈষম্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলন এবং ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি প্রদান করবে এ সংগঠন।